টাঙ্গাইলের অলোয়া তারিনীতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের ঘুষের টাকা নেয়ায় শালিশী বৈঠক!

অপরাধ টাঙ্গাইল সদর শিক্ষা

সুলতান কবির: টাঙ্গাইল পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের অলোয়া তারিনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রথিন্দ্রনাথ সরকার কাজল অপ্রাপ্তবয়সী ছেলে-মেয়ের বিয়ের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে ভয় দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এজন্য এক সালিশী বৈঠকে ২০টি জুতার বাড়ি ও ঘুষের টাকা ফেরতের শাস্তি ধার্য করেছেন স্থানীয় মাতাব্বররা।

 

 

 

টাঙ্গাইল পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের অলোয়া তারিনী এলাকার তিনরাস্তা মোড়ে ৩১ মে, শুক্রবার রাত ১০টায় ওই সালিশী বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

জানা যায়, স্থানীয় মাতব্বরদের সালিশী বৈঠকে ঘুষের ৫০ হাজার টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কাজল। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে টাকা ফেরত দেয়ার কথা স্বীকার করায় পরবর্তীতে সালিশী বৈঠকের জুড়ি বোর্ডের নেয়া ২০টি জুতার বাড়ি দেয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়।

সালিশী বৈঠকে স্থানীয় মাতাব্বর আজগর আলীর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন আকাব্বর হোসেন, দেলোয়ার প্রিন্সিপাল, অভিযোগকারী ছেলের বাবা জামাল মিয়া, মেয়ের বাবা আনোয়ার হোসেনসহ গন্যমান্য মাতাব্বর ও গ্রামের প্রায় তিন শতাধিক লোকজন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কাজল মাস্টারসহ কয়েকজন ভুয়া মাতাব্বর এ ধরণের অপরাধ দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে আসছেন। তারা নীরিহ মানুষের কোন সমস্যা দেখলেই ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায় করছেন। শুধু সামাজিকভাবে নয় আইনানুগভাবে তাদের বিচার হওয়া উচিত। কাজল মাস্টার একজন স্কুলের প্রধান শিক্ষক হয়েও কিভাবে এ ধরণের অপরাধ করছেন বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসন, শিক্ষা প্রশাসনসহ সকল মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা।

সালিশী বৈঠকে অভিযোগকারী ছেলের ও মেয়ের বাবা বলেন, ভুয়া মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক এনে ও জেল জরিমানার ভয় দেখিয়ে আমাদের দুই অভিভাবকের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নেন কাজল মাস্টার। পরবর্তীতে আমরা জানতে পারি টাকা খাওয়ার জন্য ঘটনাটি ছিল কাজল মাস্টারের সাজানো। এ কারণে আমরা দুই পরিবার সমাজের মাতাব্বরদের কাছে বিচার প্রার্থনা করি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রথিন্দ্রনাথ সরকার কাজল জানান, মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিকদের দেয়ার জন্য নেয়া ৫০ হাজার টাকা ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফারুক হোসেনের কাছের দেয়া হয়েছিল।

স্কুল শিক্ষক হওয়ায় জুড়ি বোর্ডের ২০টি জুতার বাড়ি দেয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে বলে ব্ঠৈকে জানান স্থানীয় মাতাব্বর দেলোয়ার প্রিন্সিপাল।

সালিশী বৈঠকের সভাপতি ও স্থানীয় মাতাব্বর আজগর আলী বলেন, কাজল মাস্টারের বিরুদ্ধে উঠা ঘুষের টাকা নেয়ার অভিযোগটি প্রমাণিত হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ওই টাকা ফেরত দিবেন বলে সময় নিয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ফারুক হোসেন জানান, অপ্রাপ্ত বয়সী ছেলে ও মেয়ের বিয়ের বিষয়ে একটি সালিশ হয়েছিল। তবে সেই সালিশে আমি উপস্থিত ছিলাম না। ওই ঘটনায় কাজল মাস্টার আমাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। মিথ্যা তথ্য ও অপপ্রচার চালানোর জন্য আমি কাজল মাস্টারকে ধরবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *