নাগরপুরে গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে প্রবাসীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা, গ্রেপ্তার ২

অপরাধ নাগরপুর ফিচার

নাগরপুর প্রতিনিধি: নাগরপুরে গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে মোঃ লুৎফর রহমান (৩২) নামে এক প্রবাসীকে ছুরিকাঘাত ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ২ জন। রবিবার (২৮ এপ্রিল) রাতে উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের সহবতপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত প্রবাসী লুৎফর রহমান উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের সহবতপুর পূর্বপাড়া গ্রামের মো. আশরাফ আলীর ছেলে। আহত দু’জন হলেন, ওই ইউনিয়নের চরডাঙ্গা গ্রামের আব্দুর রশিদ দেওয়ানের ছেলে আব্দুল মতিন (২৬) ও মো. আজম মিয়ার ছেলে আব্দুল বাতেন (৪২)। তাদের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় পুলিশ দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, সহবতপুর ইউনিয়নের লালটু মিয়ার ছেলে মো. যুবায়ের (২৭) ও বদ্দু মিয়ার ছেলে মো. আকাশ (২২)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাগরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ এইচএম জসিম উদ্দিন।

পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, সহবতপুর ইউনিয়নের শালিয়ারা গ্রামের ময়নাল সিকদার কাঠ ব্যবসায়ী বাকাইয়ের কাছে একটি আম গাছ বিক্রি করেন। রবিবার সকালে ওই ব্যবসায়ী তিনজন গাছ কাটার লেবার (গাইছা) কে গাছ কাটতে পাঠান। গাছ কাটার সময় ঘরের চালের উপর ডাল যেন না পড়ে এ নিয়ে লেবারদের গাছ কাটতে বাঁধা দেয় ময়নালের ছেলে নজরুল। এ নিয়ে লেবারদের সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে নজরুল ও তার ছোট ভাই মিলে একজনক লেবারকে মারধর করে ও অপরজনকে গাছের সাথে বেঁধে রাখে।

খবর পেয়ে কাঠ ব্যবসায়ী বাকাই এলাকাবাসীর সহযোগিতায় তাদেরকে সেখান থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন। পরে ঐদিন সন্ধায় লেবার করিমের ভাতিজা বাতেন লুৎফর ও মতিনকে সাথে নিয়ে নজরুলের বাবা ময়নালের সাথে কথা বলার জন্য সহবতপুর বাজারে যায়। ময়নালের সাথে কথা বলার সময় নজরুলের নেতৃত্বে ৭ থেকে ৮ জনের একটি দল দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে অতর্কিতভাবে তাদের উপর হামলা করে। মুমুর্ষ অবস্থায় লুৎফরকে উদ্ধার করে নাগরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. নয়ন মন্ডল তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

গুরুতর আহত বাতেন ও মতিনকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে মতিনের অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।

নিহতের চাচাতো ভাই আনোয়ার হোসেন বলেন, গাছ কাটা নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের মিমাংসার উদ্দেশ্যে বাতেন, লুৎফর ও মতিন সহবতপুর বাজারে ময়নালের কাছে যায়। এ সময় ময়নালের ছেলে নজরুল দলবল নিয়ে তাদের উপর হামলা করলে হতাহতের ঘটনাটি ঘটে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. নয়ন মন্ডল জানান, নিহত লুৎফরের বুকের বা পাশে ছুরিকাঘাতের কারনে হার্টে ইনজুরি হয়ে লুৎফরের মৃত্যু হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে।

নাগরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ এইচএম জসিম উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় নাগরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়েছে। হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *