সন্তোষে সরকারী জলাশয় ভরাট করে মার্কেট নির্মাণের প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত

অপরাধ টাঙ্গাইল সদর ফিচার মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলের সন্তোষে মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর স্মৃতি বিজড়িত সরকারি পুকুর (জলাশয়) অবৈধভাবে ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণের পায়তারার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

রবিবার, ২১ এপ্রিল সকালে পৌর শহরের সন্তোষ পীর শাহাজামান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি ও সর্বস্তরের জনসাধারণের উদ্যোগে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র জামিলুর রহমান মিরন, পীর শাহ্জামান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির বর্তমান আহবায়ক ও ভাসানীর নাতি হাসরত খান ভাসানী, সদস্য সচিব আবু বক্কর সিদ্দিক, যুগ্ম-আহবায়ক মাসুম আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিক হোসেন বিএসসি প্রমুখ।

জানা যায়, মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী সন্তোষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ সর্বমোট ৩৩টি প্রতিষ্ঠান স্থাপনের পরিকল্পনার কাজ শুরু করেন। এ কাজগুলো বঙ্গবন্ধুকে সমন্বয় করেই শুরু করেছিলেন। ১৯৭৪-৭৫ সালে টাঙ্গাইল পৌর এলাকায় সন্তোষে টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রায় ১০ একর জমি লীজের জন্য আবেদন করেন তিনি। সে বছরই সেখানে প্রতিষ্ঠিত হয় পীর শাহ্জামান মার্কেট এবং ভোগ্য পণ্য সমিতিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। ১৯৭৬ সালে ভাসানীর মৃত্যুর পর ১৯৮৪ সালে জাতীয় সংসদে গঠন করা হয় সন্তোষ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাষ্ট বোর্ড। এই ট্রাষ্টই বোর্ডের দখলেই ছিল এই জমি। পরবর্তীতে ২০০৫ সালে ট্রাষ্টই বোর্ডের সাথে সমঝোতা স্বাক্ষর হয় ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে।

আরও জানা যায়, ২০০৫ সালেই বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের ফজলুল করিম সন্তোষ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাষ্ট বোর্ড পক্ষে সেক্রেটারী এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) সদরকে বিবাদী করে রেকর্ড সংশোধনের মামলা দায়ের করেন। ডিপি খতিয়ান ১/১ সাবেক দাগ ৮০৩,৮০৪, এবং হাল দাগ ২০০৪,২০০৫,২০০৬ । ২০০৭ সালে সে রেকর্ড মামলায় রায় পান বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

সন্তোষ পীর শাহাজামান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির আহ্বায়ক, ভাসানীর নাতি হাসরত খান ভাসানী জানান, ১৯৭৬ সালে মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর মৃত্যুর পর থেকে এই প্রতিষ্ঠানগুলো ষড়যন্ত্রের মুখে পড়ে। এখন ভাসানীর হাতে গড়া পীর শাহ্‌জামান মার্কেট ভেঙে পৌর সুপার মার্কেট নির্মাণ করলে মেনে নেওয়া হবে না। এটা বন্ধ না হলে কঠোর আন্দোলনে গড়ে তোলা হবে।

এ বিষয়ে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আমি এসেছি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে। স্থানীয় কোনো রাজনীতিতে আমি জড়াতে চাই না। মার্কেট নির্মাণের বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না।’

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এস. এম সিরাজুল হক আলমগীর জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের রাস্তায় সবসময় যানজট থাকে। পীর শাহ্জামান মার্কেটের কারণে রাস্তা দিয়ে মানুষের চলাচল করতে অসুবিধা হয়। তাই মার্কেটটি উত্তর পাশে সরিয়ে নিলে রাস্তাটি বড় ও নান্দনিক হবে। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চুক্তিতে উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন তারা।

টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সিনথিয়া আজমেরী খান বলেন, ‘ইতোমধ্যে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি লিখেছি। খুব দ্রুতই জায়গাটি উদ্ধারে অভিযান চালানো হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *