টাঙ্গাইলে পৌরসভা স্টাফের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ!

অপরাধ টাঙ্গাইল সদর দুর্নীতি ফিচার

নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইল পৌরসভার মেহেদী নামের এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী কিশোরীর ভাতার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ায় কতিপয় মাতাব্বর ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। অভিযোগটি অধিকতর তদন্ত ও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও পৌর প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।

 

 

 

টাঙ্গাইল পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের রবি মিয়ার ছেলে ও কাউন্সিলর ফারুক হোসেনের ভাতিজা মেহেদী পৌরসভার পানি সরবরাহ কেন্দ্র- ১ এ নলকূপ মিস্ত্রি পদে কর্মরত।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পরই অলোয়া তারিনীর লাল মিয়ার বাক প্রতিবন্ধী কিশোরী মোছা. লাবনী আক্তারের প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দেন ফারুক হোসেন। পৌরসভায় চাকুরী আর উভয়েই কাউন্সিলরের আত্মীয় হওয়ার সুযোগ নিয়ে প্রতিবন্ধীর ভাতার কার্ড করার সকল দায়িত্ব নেন অভিযুক্ত মেহেদী। তবে প্রতিবন্ধীর পরিবার ভাতার কার্ডটি এখনও পাননি।

সম্প্রতি প্রতিবন্ধী কিশোরীর ভাতার কার্ড অনুমোদন ও ভাতাপ্রাপ্তির বিষয়টি প্রকাশ পায়। কৌশলে মেহেদী প্রায় তিন বছর যাবৎ ওই ভাতার টাকা আত্মসাৎ করে আসছে বলে প্রতিবন্ধীর বাবা লাল মিয়া স্থানীয়দের অবগত করেন। ঘটনাটি এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয় মাতাব্বররা তিনগুণ টাকা জরিমানা নিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে অভিযোগটি ধামাচাপা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

অভিযোগের সত্যতা জানতে ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী কিশোরী লাবনী আক্তারের বাড়িতে গেলে সে তার নিজ নামে উত্তোলনকৃত ২০০৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত টাঙ্গাইল পৌরসভার জন্মসনদ ব্যতিত দেখাতে পারেননি প্রতিবন্ধি ভাতার কার্ড। এ সময় কিশোরীর চাচা, চাচী উপস্থিত থাকলেও সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে রাজি হননি। এছাড়াও তার বাবা লাল মিয়াকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি।

টাঙ্গাইল জেলা সমাজ সেবা অফিস সূত্র জানায়, মাসে ৮৫০ টাকা হারে প্রতিবন্ধী ভাতা দেয়া হয়। তিন মাস অন্তর অন্তর ভাতাভোগীর নগদ একাউন্টে ২৫৫০ টাকা প্রদান করা হচ্ছে।

ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা লিটন মিয়া বলেন, পৌরসভার স্টাফ মেহেদী প্রতিবন্ধী লাবনীর টাকা আত্মসাৎ করেছেন। মেহেদী কাউন্সিলরের সমর্থক। আত্মসাতকৃত টাকা ফেরত দেওয়াসহ মেহেদীর কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন তিনি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মেহেদীর মুঠোফোনে ঘটনার সত্যতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযোগটি কে দিয়েছেন? ঘটনাটি সত্য কিংবা মিথ্যা এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করেননি তিনি।

টাঙ্গাইল পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. ফারুক হোসেন বলেন, এ ধরণের কোন অভিযোগ পাইনি।

এদিকে, ৯ নং ওয়ার্ডের অলোয়া তারিনী এলাকার ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধি পরিবার ও অভিযুক্তসহ স্থানীয়দের বক্তব্য নেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারুক হোসেন।

টাঙ্গাইল সমাজ সেবা উপ-পরিচালক শাহ আলম জানান, জরুরি ভিত্তিতে ভুক্তভোগীর নগদ একাউন্ট পরিবর্তন করার জন্য শহর সমাজ সেবা কর্মকর্তা বরাবর যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীকে সমাজ সেবার মাধ্যমে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এস. এম. সিরাজুল হক আলমগীর জানান, এ বিষয়টি তিনি এখনো অবগত নন। তবে প্রতিবন্ধির ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *