নিজস্ব প্রতিবেদক: ভূঞাপুর উপজেলার কৃতিসন্তান চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. হরিশংকর দাশ (৭৪) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্যাটাগরিতে চিকিৎসাবিদ্যায় স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন। পদক পাওয়ার খবরে সারা জেলা জুড়ে আনন্দের বন্যা বইছে।
এর আগে শুক্রবার (১৫ মার্চ) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক বিজ্ঞপ্তিতে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত ১০জনের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্যাটাগরিতে চিকিৎসাবিদ্যায় ডা. হরিশংকর দাশের নাম রয়েছে।
জানা যায়, চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. হরিশংকর দাশ উপজেলার অলোয়া ইউনিয়নের নিকলা গোপাল গ্রামের ইন্দু ভূশন দাশের ছেলে। ডা. হরিশংকর দাশের বড় ভাই শিক্ষাবিদ শংকর দাশ ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন।
ডা. হরিশংকর নিকলা দড়িপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পাশ করা পর ১৯৬৬ সালে কালিহাতীর নারান্দিয়া টিআরকেএন উচ্চ বিদ্যালয় হতে এসএসসি, ১৯৬৮ সালে ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজ হতে এইচএসসি পাস করার পর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এমবিবিএসে ভর্তি হন।
পরে ১৯৭৪ সালে এমবিবিএস পাস করার নিজ উপজেলার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক হিসেবে যোগদান করেন। পরে ওই বছরেই বদলি হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে যোগদান করেন। পরে সেখান থেকে ১৯৮১ তাকে পদোন্নতি দিয়ে বরিশাল হাসপাতালে বদলি করা হয়। কিন্ত সেখানে তিনি যোগদান না করে চাকরি থেকে পদত্যাগ করেন।
পরে উচ্চতর ডিগ্রীর জন্য ১৯৮২ সালে অস্ট্রিয়ার রাজধানীর ভিয়েনাতে যান। সেখান থেকে তিনি চোখের চিকিৎসার উপর ডিও এবং এম.এ.এম.এস ডিগ্রী লাভ করেন। পরে ভিয়েনা থেকে ফিরে ময়মনসিংহ গিয়ে তার ছোট মেয়ে পারমিতার নামে ময়মনসিংহ চরপাড়ায় চক্ষু হাসপাতাল নির্মাণ করেন। সেখানেই তিনি চিকিৎসাসেবা দেন। এই হাসপাতালে প্রতিদিন তিনি এক ঘন্টার জন্য ফ্রি চিকিৎসা দিতেন রোগীদের।
এছাড়া তিনি তার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে প্রতিবছর ফ্রি ক্যাম্প করে রোগীদের বিনামূল্যে সেবা দিতেন। এর মধ্যে তিনি ভারতের মহারাষ্ট্র থেকেও চোখের উপর ডিগ্রী নেন।
চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. হরিশংকর দাশ বলেন, যে কোন পুরস্কার ও প্রাপ্তি আনন্দদায়ক। মানুষের সেবা করার জন্য চেষ্টা করেছি। এই প্রাপ্তিতে হয়তো সেটাই প্রতিফলিত। আমৃত্যু মানুষের পাশে থেকে মানুষের সেবা করতে চাই এটাই প্রত্যাশ্য।