টাঙ্গাইলে পুংলি নদীর পাড় কেটে অবৈধভাবে মাটি বিক্রির অভিযোগ

কালিহাতী টাঙ্গাইল সদর দুর্নীতি পরিবেশ ফিচার

সুলতান কবির: টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বড় বাসালিয়া গ্রামে রাতের আঁধারে পুংলি নদীর পাড় কেটে মাটি বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে উজ্জল নামের এক মাটি ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে।

 

 

 

জানা যায়, মাটি ব্যবসায়ী উজ্জল কালিহাতী উপজেলার রাজাবাড়ী গ্রামের বিএনপি নেতা হালিম ডিলারের ভাতিজা। উজ্জল শুধু মাটি ব্যবসায়ী নয়, চুরি- ছিনতাই, মাদক ও ডাকাতিসহ প্রায় অর্ধ ডজন মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। নদীর পাড় কাটায় হুমকির মুখে পড়েছে শতাধিক সনাতন ধর্মালম্বীদের বসত বাড়ি ও মন্দির।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, টাঙ্গাইল সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন তোফার নাম ভাঙিয়ে মাটি ব্যবসায়ী উজ্জ্বল নদী তীরে একাধিক ভেকু মেশিন বসিয়ে নদীর পাড় কেটে মাটি বিক্রি করছে। অবৈধভাবে মাটি বিক্রি করে প্রতিরাতে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। ফলে এলেঙ্গা পৌরসভার বাগানবাড়ী হতে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের পৌলি ব্রীজ পর্যন্ত গত অর্থ বছরে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে এলেঙ্গা পৌরসভার নির্মিত নতুন রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মাটি ভর্তি ট্রাক চলাচলের কারণে রাস্তার দুইপাশে মানুষের ঘরবাড়ি ধুলাবালিতে সয়লাব হচ্ছে। এতে করে শিশু-নারী ও বৃদ্ধ বয়সী লোকজন নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানায়, মাটি ব্যবসায়ী উজ্জল এতটাই প্রভাবশালী যে তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতে পারে না। প্রতিবাদ করলে তার বাহিনীর প্রধান খোকনকে দিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এছাড়াও মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটানোর ভয়ও দেখায়।

স্থানীয় কাউন্সিলর সুকুমার ঘোষ জানান, নদীর পাড় কেটে অবৈধভাবে মাটি বিক্রির বিষয়টি তিনি জানেন। তবে জায়গাটি টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বড়বাসালিয়া মৌজায় হওয়ায় বন্ধ বিষয়ে পৌরসভার পক্ষ থেকে কোন ভূমিকা রাখতে পারছেন না। তাছাড়াও যারা মাটি ব্যবসার সাথে জড়িত, তারা এলাকায় খুবই প্রবাভশালী। এজন্য স্থানীয়রা তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে সাহস পান না।

অভিযুক্ত মাটি ব্যবসায়ী উজ্বল মুঠোফোনে জানান, মাটির ঘাটটি মূলতঃ টাঙ্গাইল সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন খান তোফার নামে চলে। এর সাথে এলেঙ্গার সোহেল ও মোল্লাদের ভাতিজারা জড়িত আছেন। আমাকে শুধু ব্যবসা দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়েছেন। কথাগুলো প্রতিবেদকের কাছে রেকর্ড আছে। তিনি আরো জানান, আমি টাঙ্গাইল সদর উপজেলা প্রশাসন ও কালিহাতী থানা পুলিশসহ বিভিন্ন মহল ম্যানেজ করেই মাটির ব্যবসা পরিচালনা করছি।

এ বিষয়ে নদীর পাড় কেটে মাটি বিক্রি করার বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন তোফার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি পরে মোবাইল ফোনে কথা বলার কথা বলে ফোন কেটে দেন।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান-বিন-মুহাম্মাদ আলী জানান, অবৈধভাবে কেউ নদীর পাড় কেটে বিক্রির চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *