টাঙ্গাইলে খালের ওপর রাস্তা ছাড়াই নির্মাণ হচ্ছে কোটি টাকার সেতু!

পরিবেশ ফিচার ভূঞাপুর

ভূঞাপুর প্রতিনিধি: ভূঞাপুর উপজেলায় খালের ওপর প্রায় কোটি ব্যয়ে রাস্তা ছাড়াই নির্মাণ করা হচ্ছে একটি সেতু। নির্মাণাধীন সেতুর একপাশে নেই কোনো সংযোগ রাস্তা। নির্মাণাধীন এই সেতুর একটু দূরে রয়েছে শতশত বিঘা ফসলি জমি। উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কয়েড়া পশ্চিম পাড়া এলাকায় মোন্তার বাড়ি সংলগ্ন এমন সেতু একটি নির্মাণ করা হচ্ছে এই সেতু। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দাবি- সেতুটি নির্মাণের পর সংযোগ রাস্তা করে দেওয়া হবে।

 

 

 

সরেজমিনে দেখা গেছে, সম্প্রতি কয়েড়া পশ্চিম পাড়া মোন্তার বাড়ি খালের উপর নির্মাণ সেতুটির কাজ শুরু হয়েছে। বর্তমানে ব্রিজের পাইলিংয়ে ব্যাস ঢালাই কাজ শুরু হয়েছে। যেখানে সেতুটির একপাশে কোন রাস্তা নেই। এছাড়া সেতুটির পশ্চিম পাশে তেমন কোনো বসতিও নেই। মাত্র ১০-১২ টি পরিবার বসবাস করে আসছেন। খালের উপর নির্মাণ হওয়া এই সেতুর পশ্চিমপাশে নিকরাইল ইউনিয়নের সিরাজকান্দি গ্রাম। আর কাজ হচ্ছে গোবিন্দাসী অংশে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কয়েড়া পশ্চিম পাড়া গ্রামের মোন্তার বাড়ি সংলগ্ন খালের উপর ১২ মিটার দৈর্ঘ্যরে গার্ডার সেতু নির্মাণের জন্য গেল বছর ২ আগস্টে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স বিলাশ ট্রেডার্সকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এতে সেতুর নির্মাণ ব্যয় দেখানো হয় ৯১ লাখ ৪৫ হাজার ৫৪২ টাকা।

অপরদিকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারিতে কাজ শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু কাজের মেয়াদ ২ মাস পেরিয়ে গেলেও সেতুটির কাজ চার ভাগের এক ভাগ সম্পন্ন করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যে কাজের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছেন ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

স্থানীয়রা জানান, কোটি টাকা ব্যয়ে এই সেতুটি রাস্তা ছাড়াই নির্মাণ করা হচ্ছে। সেতুটির পশ্চিম পাশে নেই কোনো যাতায়াতের সংযোগ রাস্তা। যদি রাস্তা না থাকে তাহলে অযথা সরকারের কোটি টাকা খালে ফেলার মানেই হয় না।

কয়েড়া ৯ নং ওর্য়াডের ইউপি সদস্য মো. রুবেল সরকার বলেন- সেতুর পশ্চিম পাশে দীর্ঘদিন ধরে ১০ থেকে ১২ টি পরিবার বসবাস করছে। সেতু নির্মাণে শেষে সেখানে সেতুর দু’পাশে সংযোগ রাস্তা করা হবে বলে জেনেছি।

ঠিকাদার আব্দুল বাছেদ জানান, খালে পানি থাকায় কাজ শুরু করতে দেরি হয়। সেতুর সাথে ১০০ মিটার রাস্তার করা হবে।

গোবিন্দাসী ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল হোসেন চকদার বলেন- কয়েড়া পশ্চিম পাড়া এলাকায় বর্ষা মৌসুমে মানুষের যাতায়াতের কষ্ট হয়। তাছাড়া আমার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল জনদুর্ভোগ লাঘবে সেখানে বাঁশের সাঁকোর পরিবর্তে একটি সেতু নির্মাণ করা। এরই প্রেক্ষিতে এমপি মহোদয়ে ডিও লেটার মাধ্যমে সেখানে সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ জহুরুল ইসলাম বলেন- বর্ষায় যাতায়াতে ব্যাপক জনদুর্ভোগ হওয়ায় স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে বাঁশের সাঁকো ভেঙে সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। সেতুর আশপাশে অসংখ্য বসতি রয়েছে। সেতুর সাথে ৭০-৮০ মিটার রাস্তা কাজ করবে ঠিকাদার। অবশিষ্ট স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান প্রকল্পের মাধ্যমে রাস্তা বানানোর কাজ করবেন। ফলে যাতায়াতের সুফল পাবে কয়েক গ্রামের মানুষ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহিদুর রহমান জানান, স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। রাস্তা অবশ্যই হবে সেখানে। ব্রিজের বিষয়ে পিআইও আরও বিস্তারিত জানাতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *