ভূঞাপুরে চাঞ্চল্যকর শিক্ষক হত্যা: ৪ জনের বিরুদ্ধে স্ত্রীর মামলা

অপরাধ আইন আদালত ফিচার ভূঞাপুর

ভূঞাপুর প্রতিনিধি: ভূঞাপুরে পাওনা টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে আব্দুল হক মাস্টার (৫৮) নামে এক মাদরাসা শিক্ষককে বাড়িতে ডেকে নিয়ে হত্যার পর লাশ গুমের চেষ্টায় বালু চাপা দেওয়ার আলোচিত ঘটনায় পরকীয়া প্রেমিকা ও তার স্বামীসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

 

 

 

শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ার দুপুরে ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আহসান উল্লাহ্ এ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মামলায় আসামিরা হলেন, উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়নের সারপলশিয়া এলাকার পরকীয়া প্রেমিকা জাহানারা বেগম জয়নব (৩৮) তার স্বামী আব্দুল বারেক (৪৮) এবং একই এলাকার প্রতিবেশি সবুর ও জাকির।

এর আগে শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি রাতে ভূঞাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন শিক্ষক আব্দুল হক মাস্টারের স্ত্রী আয়েশা খাতুন।
পরদিন সকালে ৬ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আসামিদের আদালতে পাঠানো হয় এবং ওই শিক্ষকের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে ভূঞাপুর থানা পুলিশ।

এ ব্যাপারে ভূঞাপুর থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (এসআই) কামরুল ইসলাম জানান, শুক্রবার মরদেহ উদ্ধারের দিন রাতে স্বামী ও স্ত্রীসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন শিক্ষক আব্দুল হক মাস্টারের স্ত্রী। গ্রেফতারকৃত আসামিদের ৬ দিনের রিমান্ড চেয়ে শনিবার সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেফতার অভিযান চলছে।

উল্লেখ্য, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার শিক্ষক আব্দুল হক মাস্টার নিখোঁজ হন। পরদিন ১৬ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বিকালে উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়নের সারপলশিয়া গ্রামের মামলায় অভিযুক্ত জাহানারা ও তার স্বামী বারেকের ঘরের পাশ থেকে বালু চাপা অবস্থায় ওই শিক্ষককের মরদেহ উদ্ধার করে ভূঞাপুর থানা পুলিশ।

শিক্ষক আব্দুল হক মাস্টার উপজেলার একই ইউনিয়নের সারপলশিয়া এলাকার মৃত হাফিজ উদ্দিনের ছেলে এবং পলশিয়া দাখিল মাদসারার সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন ব্যবসার জড়িত ছিলেন বলে জানা গেছে। এমন ঘটনায় এলাকাজুড়ে বেশ চাঞ্চ্যকর সৃষ্টি হয়েছে।

এনিয়ে পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, কয়েক বছর ধরে জাহানারা ওরফে জয়নব বেগমের সাথে শিক্ষক আব্দুল হকের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই সময় তারা দুইজন মিলে এলাকায় সুদের ব্যবসা করতো। এর মধ্যে বেশ কিছু টাকা পেতো ওই শিক্ষক।

এছাড়া তাদের সম্পর্কের কথা জয়নবের স্বামী ও তার পরিবার জেনে যাওয়ায় পরিকল্পিতভাবে পাওনা টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে ডেকে নেওয়া হয়। পরে সুদ ব্যবসায়ী সহযোগী জয়নব বেগমের বাড়িতে খোঁজ নিতে গেলে তাদের বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পরে শুক্রবার ওই শিক্ষককের স্ত্রী আয়েশা খাতুন থানায় আসলে পুলিশের সহায়তায় জয়নবের বাড়ি গিয়ে বালু চাপা অবস্থায় শিক্ষককের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *