সুলতান কবির: টাঙ্গাইলের সদর উপজেলার ঘারিন্দা ইউনিয়নের সুরুজ পূর্বপাড়া এলাকার ঝিনাই নদী থেকে একটি প্রভাবশালী মহল অবাধে বালু কেটে বিক্রি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নদী থেকে বালু কেটে বিক্রি করায় সরকার একদিকে যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে। অন্য দিকে বর্ষা মৌসুমে বাড়ী-ঘর বিলীন হওয়ার আতঙ্কে দিনপার করছেন নদী পাড়ের মানুষ। স্থানীয়দের দাবি- দ্রুত নদী থেকে বালু কাটা বন্ধ না হলে তাদের বাড়ী-ঘর নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। হুমকিতে পড়বে শত-শত একর ফসলি জমি।
সরেজমিনে দেখা যায়, সদর উপজেলার ঘারিন্দা ইউনিয়নের সুরুজ পূর্বপাড়ায় ঝিনাই নদীর পাড় ও নদী থেকে বালু কেটে শতাধিক ট্রাক দিয়ে ও ভেকু মেশিন বসিয়ে রাতের আঁধারে বালু কেটে বিক্রি করছে বালু ব্যবসায়ীরা। দিনের বেলায় ভেকু মেশিনটি অনত্র সরিয়ে রাখা হয়। স্থানীয়রা জানান, দিনের বেলায় ভেকু মেশিনটি ঘুমন্ত অবস্থায় থাকলেও রাতে জেগে উঠে কর্মযজ্ঞ চালায় বিশাল আকারের দানব মেশিনটি।
স্থানীয়রা জানায়, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রশাসনের যোগসাজসে একটি মহল গত কয়েকদিন যাবৎ রাতের আঁধারে ভেকু মেশিন দিয়ে শতাধিক ট্রাক দিয়ে বালু কেটে অনত্র বিক্রি করছে। বালু ভর্তি ট্রাক রাস্তা দিয়ে চলাচলের কারণে রাস্তা বিনষ্টসহ পাশের বাড়িগুলোতে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। ট্রাকের ধূলাবালি উড়ে রান্না করা খাবার নষ্টসহ কোমলমতি শিশুরা রোগ বালাইয়ে আক্রান্ত হচ্ছে। একের পর এক ট্রাক চলাচলের কারণে ও বিকট শব্দ দূষণে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা ও শিক্ষার্থীরা ঠিকমত পড়ালেখা করতে পারছে না।
সুরুজ পূর্বপাড়ার বাসিন্দা ভুক্তভোগী মোঃ আফাজ আলী, মোঃ রফিকুল ইসলাম ও হালিম মন্ডলসহ একাধিক ব্যক্তি জানায়, সন্ধ্যা হলেই নদীতে চলে বালু ব্যবসায়ীরা কর্মযজ্ঞ। বালু ভর্তি ট্রাক চলাচলে ওই রাস্তা দিয়ে তারা সঠিকভাবে চলাফেরা করতে পারেন না। এছাড়াও ওই ট্রাকের বালু উড়ে তাদের ফসলি জমিতে পড়ে ফসল নষ্ট হচ্ছে। দেখার যেন কেউ নেই। বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। প্রতিবাদ করলে স্থানীয় চেয়ারম্যানের লোকজন এসে মারপিটের হুমকি ও মিথ্যা মামলার ভয় দেখায়।
নাম না বলার শর্তে ঘারিন্দা ইউনিয়নের কয়েকজন ইউপি সদস্য জানায়, গত সংসদ নির্বাচনে মাটি ব্যবসায়ীরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচন করে। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরপরই তারা নদী থেকে বালু কাটার উৎসবে মেতে উঠেন। গত কয়েকদিনেই নদী থেকে লাখ- লাখ টাকার বালু বিক্রি করেছেন ওই মহলটি। তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায় না।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ভূমি কর্মকর্তা অতনু বড়ুয়া জানান বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান-বিন মুহাম্মদ আলী জানান অবৈধভাবে মাটি কাটার বিষয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।