ঘাটাইলে বন্ধুর স্ত্রী প্রেম প্রত্যাখ্যান করায় গেঞ্জিতে নোট লিখে আত্মহত্যা

অপরাধ ঘাটাইল ফিচার

ঘাটাইল প্রতিনিধি: ঘাটাইল উপজেলার সাগরদীঘি ইউনিয়নের জোড়দীঘি গ্রামের বন্ধুর স্ত্রীর সঙ্গে প্রেম, সেই প্রেম প্রত্যাখ্যান করায় গেঞ্জিতে নোট লিখে আত্মহত্যা করেছে কায়সার আহমেদ (২৮) নামের এক ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারি ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে ঘাটাইল উপজেলার সাগরদীঘি ইউনিয়নের জোড়দীঘি গ্রামে।

 

 

 

জানা যায়, সাগরদীঘি ইউনিয়নের জোড়দীঘি সোহরাব হোসেন (৩০) ও একই ইউনিয়নের শহরগোপীনপুর গ্রামের কায়সার আহমেদ (২৮) পেশায় দু’জনই কাঠমিস্ত্রি। একই কর্মে থাকায় বন্ধুত্ব হয় দু’জনের মধ্যে। দু’জনেই বিবাহিত। বন্ধুত্বের সুবাদে দুই পরিবারের মধ্যে গড়ে ওঠে সুসম্পর্ক। একে অপরের বাড়িতে প্রতিনিয়ত ছিল তাদের যাতায়ত। এক পর্যায় সোহরাবের স্ত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে কায়সারের। সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় প্রেমিকার ঘরের পেছনে গিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন কায়সার। মৃত্যুর আগে তার গায়ে পরিহিত গেঞ্জিতে কায়সার নোট লিখে যায়।

সোহরাবের প্রতিবেশীরা জানায়, কায়সার আহমেদের বাড়ি থেকে তার বন্ধু সোহরাব হোসেনের বাড়ির দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। দু’জনের আয়ের পথ একই হওয়ায় বন্ধুত্ব হয়। বন্ধুত্বের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। জোড়দীঘি বাজারে কাঠের দোকান রয়েছে কায়সারের। এরই মধ্যে কাঠমিস্ত্রির কাজ বাদ দিয়ে সোহরাব চলে যান প্রবাসে। বাজারের পাশেই সোহরাবের বাড়ি হওয়ায় বন্ধুর বাড়ি যাতায়াত বেড়ে যায় কায়সারের। সাত মাস আগে দেশে আসেন সোহরাব। দেশে আসার পর পরই তার স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে যান কায়সার।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, বন্ধুত্বের সুবাদে সোহরাবের স্ত্রী, ১০ বছর বয়সী এক ছেলে সন্তানের জননীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে কায়সারের। কায়সার নিজেও বিবাহিত। কায়সার বন্ধুর স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে যান। তিনদিন থাকার পর নিজের ইচ্ছায় আবার সোহরাবের বাড়িতে চলে আসেন তার স্ত্রী। এ ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে সোহরাবের শ্বশুর এসে মেয়েকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান। ছেলে সন্তানের দিকে তাকিয়ে পারিবারিকভাবে বিষয়টি সমাধান করে পুনরায় ঘর সংসার শুরু করেন সোহরাব।

ইউপি সদস্য আরও জানান, সোহরাবের ঘরের পেছনের দিক দিয়ে পা পথ চলে গেছে। সেই পথ দিয়ে ভোরে স্থানীয় লেবু ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বাজারে যাওয়ার সময় কাঁঠাল গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় কায়সারকে দেখতে পান। তার ডাক-চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এসে লাশ নিচে নামান। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

সাগরদীঘি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক (তদন্ত) ভিক্টর ব্যানার্জি জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটা আত্মহত্যা। নিহতের গায়ে পরিহিত গেঞ্জিতে একটি নোট লেখা আছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *