নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার আসামি টাঙ্গাইল-৩ ঘাটাইল আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা ও তার অপর তিনভাইয়ের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে স্থানীয় শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ আয়োজন করা হয়।
টাঙ্গাইল-২ গোপালপুর-ভূঞাপুর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক তানভীর হাসান ছোটমনি, সাংগঠনিক সম্পাদক জামিলুর রহমান মিরনসহ অন্যরা সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। সমাবেশে টাঙ্গাইল জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব গোলাম কিবরিয়া বড়মনি ও শহর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহমদ সুমন মজিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্যে তানভীর হাসান ছোটমনি বলেন, “ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার বিচারকাজ ১১ বছরেও শেষ হয়নি। সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ এলেই কারাগারে থাকা কোন আসামি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই আদালতে আনা হয় না। আবার আসামি এলেও তদন্ত কর্মকর্তা আসেন না। এ কারণে চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার বিচার কাজ পিছিয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি টাঙ্গাইল শহরের কলেজ পাড়া এলাকায় বাড়ির কাছ থেকে জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনদিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। মামলার বিচারকার্য ১১ বছরেও শেষ হয়নি। মামলার বাদী তার স্ত্রী নাহার আহমেদ গত ২৯ ডিসেম্বর মারা গেছেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালে এই মামলায় জড়িত সন্দেহে আনিছুল ইসলাম রাজা এবং মোহাম্মদ আলী নামের দুইজনকে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তাদের আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে এই হত্যা মামলার সঙ্গে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, তার অপর তিনভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সহসভাপতি ছানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার বিষয়টি বের হয়ে আসে।
তদন্ত শেষে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। এতে সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খানরা চার ভাইসহ ১৪ জনকে আসামি করা হয়।
এই মামলার আসামি আমানুর রহমান খান রানা আত্মসর্মপণের পর তিনবছর কারাগারে ছিলেন। বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত আছেন। গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি আবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তার অপরভাই সাবেক পৌর মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি এখনও কারাগারে আছেন। অন্য দুই ভাই জাহিদুর রহমান খান কাকন, সানিয়াত খান বাপ্পা পলাতক রয়েছেন।