ভূঞাপুর প্রতিনিধি: ভূঞাপুর উপজেলায় যমুনার পানি শুকিয়ে যাওয়ায় জেগে ওঠা বালুচরে বাদামের চাষ করেছেন স্থানীয় কৃষকেরা। এই ফসলের সবুজ পাতায় ছেয়ে গেছে চরাঞ্চল। গত বছরের মতো এবারও ভালো দাম ও ফলন পাওয়ার আশায় বেশি জমিতে বাদাম চাষ করেছেন চাষিরা।
ভূঞাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আরিফুর রহমান জানান, চলতি বছর যমুনার চরাঞ্চলে ১ হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এবার বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী, অর্জুনা এবং গাবসারা ইউনিয়নের চরতারাই, চরভরুয়া, বলরামপুর, কুঠিবয়ড়া, রায়ের বাসালিয়া, রামাই, বাসিদকল, রুলিপাড়া, গোবিন্দপুর, রামপুর, ডিগ্রিরচর ও কোনাবাড়ীর চরাঞ্চল বাদাম গাছের সবুজ পাতায় ঢেকে গেছে।
বাদাম চাষিরা বলেন, প্রতি বছর বন্যায় আমাদের অনেক ক্ষতি হয়। ক্ষতি পুষিয়ে বন্যা পরবর্তী সময়ে জেগে ওঠা চরে বাদাম চাষ করি। কারণ অল্পদিনে বাদাম চাষ করে অধিক লাভবান হওয়া যায়। খরচ বাদ দিয়ে বিঘাপ্রতি লাভ হয় প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা।
গাবসারা চরাঞ্চলের বাদাম চাষি গফুর মিয়া বলেন, ‘গত বছর আট বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করে ভালো লাভবান হয়েছিলাম। বাদামের দাম ভালো পাওয়ায় এ বছর প্রায় ১২ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও বাম্পার ফলন হবে।’
সুস্বাদু ও মুখরোচক বাদাম যেমন খাদ্য হিসেবে জোগান দিয়ে থাকে অন্যদিকে তেলের চাহিদা পূরণ করে। বাদাম খেত থেকে কচিপাতা কেটে কৃষকেরা গরু-ছাগলের খাওয়ান। এতে গরু-ছাগল স্বাস্থ্যবান হয় বলে জানান কৃষকেরা।
কৃষকেরা আরও জানান, অন্য ফসলের মতো বাদামের জমিতে তেমন একটা সার ও কীটনাশক দিতে হয় না। শুধু সময়মতো বীজ বুনে বাদাম ঘরে তোলার জন্য অপেক্ষায় থাকতে হয়। বীজ রোপণে দুই থেকে তিন মাসের মধ্যেই বাদাম তুলে সংগ্রহ ও হাট-বাজারে বিক্রি করা যায়।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ আরিফুর রহমান বলেন, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চরাঞ্চলের বাদাম চাষিদের মধ্যে বিনামূল্যে সার ও বাদামের বীজ বিতরণ করেছি। বাদামের ফলন ভালো করার জন্য আমাদের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছেন। আশাকরছি, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবছর বাদাম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।