
ঘাটাইল প্রতিনিধি: ঘাটাইল উপজেলায় ইটভাটার সংখ্যা ৫০টির মধ্যে নিবন্ধন রয়েছে মাত্র ১৪টির। হাইকোর্টে রিট করে চলছে ১৬টি। সম্পূর্ণ অবৈধের তালিকায় রয়েছে ২০টি। আবার অধিকাংশ ভাটারই নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানোর ফলে বনাঞ্চল ধ্বংসসহ হুমকিতে পড়েছে প্রাকৃতিক পরিবেশ।
সরেজমিনে এসব ইটভাটায় দেখা যায়, জ্বালানি হিসেবে স্তুপ করে রাখা হয়েছে কাঠ। অথচ জিগজ্যাগ পদ্ধতিতে স্থাপন করা এসব ভাটায় জ্বালানি ব্যবহার করার কথা কয়লা। আইনে কাঠ পোড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবে লোক দেখানো কিছু কয়লা ভাটাগুলোর পাশে রাখা আছে। স্থানীয়রা জানান, প্রতিরাতেই ট্রাক ভরে বনের কাঠ যায় ইটের ভাটায়। এলাকাবাসির শঙ্কা, এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই ধ্বংস হয়ে যাবে বন।
ভাটা মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বছর কয়লার দাম ছিল প্রায় ২৭ হাজার টাকা মেট্রিকটন। এ বছর টন প্রতি কমেছে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা। বর্তমানে কয়লা ক্রয় করা হচ্ছে প্রতি টন ২০ থেকে ২১ হাজার টাকায়। অপরদিকে প্রতি মেট্রিকটন কাঠের দাম মাত্র ছয় থেকে সাত হাজার টাকা। ভাটাগুলোর অবস্থান বনের আশেপাশে হওয়ায় সহজেই জুটছে কাঠ। কয়লার তুলনায় দাম কম হওয়ায় বলী দেওয়া হচ্ছে বনকে।
ইট পোড়ানো শ্রমিকরা জানান, প্রতি ভাটায় ইট পোড়াতে দিন-রাত সাত থেকে প্রায় আট মেট্রিকটন কাঠের প্রয়োজন হয়। আর এসব কাঠের জোগান অধিকাংশই আসে বন থেকে। বন বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে, ঘাটাইলে মোট বনভূমির পরিমাণ ২৫ হাজার ৭১১ একর। মূলতঃ পাহাড়কে কেন্দ্র করে বন গড়ে উঠেছে। এখানে রয়েছে সংরক্ষিত বনসহ সামাজিক বনায়নের গাছ।
ঘাটাইল ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি মো. শাহজাহান বলেন, বন ধ্বংস করে ইট পোড়ানো সমিতি সমর্থন করে না। এরই মধ্যে ভাটা মালিকদের সমন্বয়ে করা সভায় কাঠ দিয়ে ইট পোড়াতে নিষেধ করে দেওয়া হয়েছে।
টাঙ্গাইল পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জমির উদ্দিন বলেন, আইন অনুযায়ী ইট পোড়াতে জ্বালানি কাঠের ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যে ভাটাগুলো এ কাজে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে অচিরেই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরতিজা হাসান বলেন, কাঠ পোড়ানো এবং পাহাড়ী লালমাটি রাখার দায়ে এরই মধ্যে কয়েকটি ভাটায় অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যদি সুনির্দিষ্টভাবে কোনো ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে তার বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।