ঘাটাইল প্রতিনিধি: ঘাটাইল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংস ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। ঈগলে ভোট না দেওয়ায় নৌকা সমর্থক বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলা ও ঘর পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে। নৌকা সমর্থকদের ওপর হামলা ও নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগে জানা গেছে।
লোকেরপাড়া ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত আঃ লতিফ মিয়ার ছেলে জয়নাল সরকার বলেন, আমি নৌকার পক্ষে কাজ করেছি এবং ভোট দিয়েছি। নৌকা মার্কা পাশ করতে না পারায় রাত ১০টার দিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন আমার বাড়িতে এসে হামলা চালায়। দা, চাইনিজ কুড়াল, রড দিয়ে আমার দোকানের টিন কেটে ও বাইরাইয়ে ঝাঁজরা করে দেয়। পরে যাওয়ার সময় আমাদের একটি ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। স্থানীয়রা এসে আগুন নিভালেও সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক বাবুর নেতৃত্বে এ ঘটনা হয় বলেও জানান তিনি।
একই ইউনিয়নের পাচটিকড়ি মধ্যপাড়া গ্রামের বৃদ্ধ শামছু সরদারের (৭০) বাড়িতে হামলা চালানো হয়। তার ছেলেরা নৌকায় ভোট দিয়েছিলেন। ফলে নৌকা ফেল করলে তার ছেলে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। পরে সোমবার সকাল ৯টার দিকে স্বতন্ত্র সমর্থকরা তার বাড়িতে গিয়ে তার ছেলে সাজাহানকে না পেয়ে কুপিয়ে তার ঘরের বেড়া কেটে ফেলে। এক পর্যায়ে তার বাবা বৃদ্ধ শামছু সরদারকেও মারধর করা হয়।
নলছোবা গ্রামের আঃ হালিমের ছেলে হেলাল উদ্দিন বলেন, আমি চাকরি করি। ভোট দেওয়ার জন্য আমি বাড়ি আসি। সোমবার সকালে আমি ঘুমিয়েছিলাম। এমন সময় স্বতন্ত্র সমর্থকরা আমার ছোট ভাই আল আমিনকে কিল ঘুষি মারে। আমি বিছানা থেকে উঠে ফিরাইতে গেলে আমার মাথায় এলোপাথারি কিলঘুসি মেরে আমাকে মারাত্মক জখম করে।
তার মা নাছিমা বেগম বলেন, শুধু মারপিট করেই ক্ষান্ত হয়নি। আমাদের নানা হুমকিও দিতেছে। দুপুরের দিকে আমাদের বাড়ির সামনে এসে আতশবাজি ও ফটকা ফুটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এ ব্যাপারে অভিযোগ দেওয়ার জন্য থানায়ও যাইতে পারছি না। এভাবে সংগ্রামপুর ইউনিয়নের ছনখোলা বাজারের চায়ের দোকানদার কামাল জানান, আমার দোকানটি ভেঙে ফেলেছে স্বতন্ত্র সমর্থকরা।
সাগরদিঘী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হেকমত সিকদার জানান, নৌকা হেরে যাওয়ার ফলে স্বতন্ত্র সমর্থকরা তাণ্ডব শুরু করে দিয়েছে। সকালে আমার ভাতিজা আশরাফকে মারধর করেছে স্বতন্ত্র সমর্থকরা। এ ছাড়াও জোড়দিঘী ৭নং ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বারকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। সাগরদিঘী নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতি মিন্টু মিয়াকে মারধর করা হয়েছে। জুলহাস মেম্বারের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। নৌকা সমর্থকরা এভাবেই হামলা ও বর্বর নির্যাতনের শিকার হচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
এ বিষয়ে সোমবার সন্ধ্যায় একাধিকবার থানায় গিয়ে ঘাটাইল থানা অফিসার ইনচার্জ আবু ছালাম মিয়াকে পাওয়া যায়নি। পরে তার সরকারি নম্বরে বারবার ফোন করলে রিং বাজলেও তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি।