নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইল জেলার আটটি নির্বাচনী আসনের মধ্যে তিনটি আসনে ২০জন পুরুষ প্রার্থীর বিপরীতে সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে তিন নারী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
জেলার আটটি আসনের মধ্যে টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে স্বতন্ত্র (ঈগল) প্রতীকের প্রার্থী হয়েছেন ব্যারিস্টার সারওয়াত সিরাজ শুক্লা, টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে বাংলাদেশ কংগ্রেস (ডাব) প্রতীকের প্রার্থী রূপা রায় চৌধুরী ও টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনে তৃণমূল বিএনপি (সোনালী আঁশ) প্রতীকের প্রার্থী হয়েছেন পারুল।
ব্যারিস্টার সারওয়াত সিরাজ শুক্লা সাবেক মন্ত্রী এবং স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠক শাহাজাহান সিরাজের মেয়ে। তিনি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। শাজাহান সিরাজের অনুসারীদের সঙ্গে নিয়ে তিনি নির্বাচনি মাঠে নেমে ইতিমধ্যে বেশ আলোচনায় এসেছেন।
এ আসনে ব্যারিস্টার সারওয়াত সিরাজ শুক্লার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত (নৌকা) প্রতীকের প্রার্থী মোজহারুল ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু, আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী স্বতন্ত্র (ট্রাক) প্রতীকের প্রার্থী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। এই তিন প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়াও এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জাতীয় পার্টির (লাঙ্গল) প্রতীকের প্রার্থী লিয়াকত আলী, জাকের পার্টির (গোলাপ ফুল) প্রতীকের প্রার্থী মোন্তাজ আলী, তৃণমূল বিএনপির (সোনালী আঁশ) প্রতীকের শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (একতারা) প্রতীকের প্রার্থী শুকুর মামুদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের (মশাল) প্রতীকের প্রার্থী এস এম আবু মোস্তফা ও জাতীয় পার্টি-জেপি (বাইসাইকেল) প্রতীকের প্রার্থী সাদেক সিদ্দিকী।
টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে ডাব প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন রূপা রায় চৌধুরী। তিনি একজন গৃহিণী। তিনি মির্জাপুরের বাগজান গ্রামের অনিল মৈশালের মেয়ে ও হিমাংশু রায় চন্দনের স্ত্রী। তিনি এর আগে একবার ইউনিয়ন পরিষদে ও দুইবার জাতীয় সংসদ এবং একবার উপনির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রতিবারই জামানত হারান। তিনি এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এবং বারবার নির্বাচনে আসার কারণে সর্বমহলে পরিচিত হয়েছেন।
এ আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত (নৌকা) প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভ ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র (ট্রাক) প্রতীকের প্রার্থী মীর এনায়েত হোসেন মন্টু। এ ছাড়াও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের (গামছা) প্রতীকের প্রার্থী আরমান হোসেন তালুকদার, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি (হাতুড়ি) প্রতীকের প্রার্থী গোলাম নওজব চৌধুরী, জাকের পার্টির (গোলাপ ফুল) প্রতীকের প্রার্থী মোক্তার হোসেন ও জাসদ (মশাল) প্রতীকের প্রার্থী মঞ্জুর রহমান মজনু।
টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সোনালী আঁশ প্রতীকে নির্বাচনে নাম লিখিয়েছেন নতুন মুখ পারুল। কালিহাতী উপজেলার গোলড়া গ্রামের গৃহিণী পারুল লোকমান হোসেনের স্ত্রী। তিনি বাসাইল-সখীপুরের অপরিচিত এক নাম হলেও নির্বাচনে হেভিওয়েট প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নির্বাচনি মাঠে নেমেছেন। এ আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য অনুপম শাহজাহান জয় ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি (গামছা) প্রতীকের প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম।
এ ছাড়াও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জাতীয় পার্টির (লাঙ্গল) প্রতীকের প্রার্থী রেজাউল করিম, বিকল্পধারা বাংলাদেশ (কুলা) প্রতীকের প্রার্থী আবুল হাশেম ও বাংলাদেশ কংগ্রেস (ডাব) প্রতীকের প্রার্থী মোস্তফা কামাল।
নির্বাচন প্রসঙ্গে কালিহাতী আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সারওয়াত সিরাজ শুক্লা বলেন, ‘আমার বাবা শাহজাহান সিরাজের পাশে যেভাবে কালিহাতীবাসী দাঁড়িয়েছিলেন, আমার পাশেও তারা সেভাবেই দাঁড়িয়েছেন। আমি অবশ্যই কালিহাতীকে মাদক, সন্ত্রাস, বৈষম্যমুক্ত, সুন্দর ও অনন্য উচ্চতার একটি উপজেলা গড়ার জন্য কাজ করবো। বিজয়ী হলে সবার আগে শিশু ও নারীদের জন্য একটি হাসপাতাল করবো। আমি শতভাগ আশাবাদী কালিহাতীর জনগণ আমাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবেন।’
মির্জাপুর আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী রূপা রায় চৌধুরী বলেন, ‘জনগণের সেবা করা আমার ইচ্ছা। আমার বিশ্বাস, জনগণ একবার না একবার আমাকে সেবা করার সুযোগ দেবেন। আমি বিজয়ী হলে মির্জাপুরকে স্মার্ট উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলবো।’
বাসাইল-সখীপুর আসনে তৃণমূল বিএনপির সোনালী আঁশ প্রতীকের প্রার্থী পারুল বলেন, ‘আমি অন্যায়, অবিচার, দুর্নীতি দূর করে দুই উপজেলাকে সুন্দর করে সাজাতে চাই। দুই উপজেলার জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করলে মানবকল্যাণে নিবেদিত থাকবো।’