গোপালপুরের মোস্তফার হাঁস পালনে ব্যাপক সাফল্য

কৃষি গোপালপুর ফিচার

গোপালপুর প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের গোপালপুরের উত্তর বিলডগা গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের পুত্র মোঃ মোস্তফা (৫৫) দীর্ঘ ৩০ বছর হাঁস পালনে ব্যাপক সাফল্যে লাভ করেছে। প্রতি বছর হাঁস পালন করে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা আয় করেন তিনি।

 

 

 

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ৯০০ হাঁস নিয়ে ধান কেটে নিয়ে যাওয়া খালি মাঠে বসে আছেন তিনি, মাঠে পরে থাকা ধান কুড়িয়ে খাচ্ছে হাঁসগুলো। এসময় হাঁস পালনের বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় বর্ণনা করেন তিনি জানান, ৩০ বছর আগে ২২টি হাঁস পালনের মাধ্যমে শুরু করেছিলেন; পরে পর্যায়ক্রমে বাড়াতে থাকেন। একপর্যায়ে ১১০০ হাঁস একসাথে পালন করতেন । এবছর ৯০০টি নর হাঁসের বাচ্চা ময়মনসিংহ থেকে ৪২টাকা টাকা দরে কিনে এনেছেন।

নর হাঁস সাড়ে তিন মাস থেকে ৪মাস পালন করলে বিক্রির উপযোগী হয় । প্রতিটি ৪৫০ থেকে ৫০০টাকা বিক্রি করা যায় । নলিন, পিংনা, ভেঙ্গুলা ও গোপালপুর হাট ছাড়াও বাড়িতে পাইকারের কাছে বিক্রি করেন।

তিনি আরও জানান, ২২দিন বয়স পর্যন্ত বাচ্চা হাঁসকে ব্রয়লারের খাবার দিতে হয়। এরপর বর্ষায় পার্শ্ববর্তী ডগাবিলে একমাসের বেশি সময় শামুক কুড়িয়ে খায়, এসময় খাওয়ার কোন খরচ হয় না। এছাড়াও বর্ষাকালে হেলেঞ্চা বিলসহ বিভিন্ন বিলে হাঁসসহ চলে যান।

পরবর্তীতে প্রতিদিন খাবারের জন্য ২মন ধান দরকার হতো, এখন মাঠে ধান খুটে খাচ্ছে তাই এক মণ ধান দরকার হয়। বিগত ৩মাসে ২লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে হাঁসগুলোর জন্য। রোগ বালাই খুব একটা নেই, হঠাৎ ২/১টা মারা যায়। এপর্যন্ত খাওয়ানোর ব্যতিক্রমে সর্বোচ্চ ২৩টা হাঁস একসাথে মারা গেছে বলে সে জানায়।

বাড়িতে হাঁস পালনের জন্য আলাদা শেড বানিয়েছেন, যখন হাঁস শামুক খায় তখন বালুর উপর রাখেন, এমনিতে সাধারণভাবেই রাখা যায়। গরমের সময় ৪টি ফ্যান দিতে হয়, শীতে খুব একটা সমস্যা হয় না।

মাদি হাঁস দীর্ঘ ১০মাস ধরে পালন করতে হয়, দু’বছর আগে নিয়মিত মাদি হাঁস পালন করতেন । তখন দৈনিক অন্তত ৮০০ডিম বিক্রি করতেন। এখন তার শারীরিক সমস্যার কারণে আগের মতো শ্রম দিতে পারেন না, তাই নর হাঁস পালন করেন।

পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কারণে রোগবালাই কম হয়। মাদি হাঁস দীর্ঘদিন পালন করতে হয়, তাই ভ্যাকসিন দিতে হয়। নর হাঁস অল্প সময় পালন করায় ভ্যাকসিন দরকার হয় না। তবে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে চাহিদামতো ভ্যাকসিন পাওয়া যায় বলে জানান।

হাঁসের খামারের আয় দিয়েই তার সংসার চলে, ব্যাংকে টাকা জমান। তার এক ছেলে সন্তান রয়েছে। লালন পালনের সকল কাজ তিনি একাই করেন, এবছর প্রতিবেশী আতিকুর রহমানকে সাথে রেখে হাঁস পালন শেখাচ্ছেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আয়নাল খাঁন বলেন, মোস্তফা দীর্ঘদিন ধরেই হাঁস পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। বেকার যুবকদের উচিৎ ওর মতো খামার করা।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শরীফ আব্দুল বাসেত বলেন, তিনি আমাদের একজন নিবন্ধিত খামারি। প্রয়োজনানুযায়ী উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে ডার্ক প্লেগ ও ডার্ক কলেরা ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হয় এবং নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *