নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলের সৃষ্টি কলেজে অধ্যয়নরত সূর্য নামের এক ছাত্রকে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগে স্কুল শাখার এস.এস.সি পরিক্ষার্থী তিন ছাত্রকে আটক করেছেন প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। হামলায় গুরুতর আহত সূর্য বর্তমানে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
বুধবার, ৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন টাঙ্গাইল পৌর শহরের সুপারী বাগান এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। আটক ছাত্ররা হলেন, সৃষ্টি একাডেমিক স্কুলের এস.এস.সি পরিক্ষার্থী জিদান, ইসমাম ও আসলাম।
আহত সৃষ্টি কলেজ ছাত্র সূর্য (১৭) মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলার ধামসুর গ্রামের কৃষক জুলহাস মিয়ার ছেলে। সে সৃষ্টি কলেজের একাদশ শ্রেণীর মানবিক বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ও প্রতিষ্ঠানের এনএক্স আবাসিক ভবনে বসবাসরত। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে সৃষ্টি শিক্ষা পরিবারের চেয়ারম্যান সংবাদ মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক কোন বক্তব্য দেননি। এমনকি ঘটনাটি থানা পুলিশকেও অবগত করা হয়নি।
হামলার শিকার সূর্য জানায়, নামাজ পড়ে ভবনে ফেরার পথে হামলাকারি ওই তিন ছাত্র আমাকে বলে তাদের এক বড় ভাই আমাকে ডেকেছেন। আমি ওই বড় ভাইয়ের কাছে যাওয়া মাত্রই পিছন থেকে তারা আমার মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। কারা আর কেন আমার উপর হামলা করলো এবং যে বড় ভাই আমাকে ডেকেছেন আমি তাদের কাউকেই চিনি না। সে আরও জানায়, আমি তিন মাস হলো মাত্র এই কলেজে ভর্তি হয়েছি।
হামলাকারি জিদান জানায়, ভুলবশত ওই ছাত্রের উপর হামলা করেছে তারা। হামলায় ওই ছাত্রই জড়িত বলে জানায় সে।
সৃষ্টি কলেজের এনএক্স আবাসিক ভবনের ইনচার্জ মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, হামলার শিকার ও হামলাকারিরা আমাদের প্রতিষ্ঠানের ছাত্র। কেন আর কি কারণে হামলার ঘটনাটি ঘটেছে সেটি তিনি স্পষ্ট না। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের উর্দ্ধতন কি পদক্ষেপ নিচ্ছেন সেটিও তিনি অবগত নন। আবাসিক ভবনের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দায়িত্বরত ইনচার্জ আরও বলেন, ঘটনাটি প্রতিষ্ঠানের বাইরে ঘটেছে।
সৃষ্টি শিক্ষা পরিবারের পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান হ্যাপি বলেন, ঘটনাটি নিয়ে প্রতিষ্ঠানিকভাবে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এছাড়া থানা পুলিশকেও বিষয়টি অবগত করা হয়নি।
সৃষ্টি শিক্ষা পরিবারের চেয়ারম্যান লায়ন ড. শরিফুল ইসলাম রিপনের মুঠোফোন একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (সহকারি উপ-পুলিশ পরিদর্শক) আতিকুর রহমান ভূঁইয়া জানান, সৃষ্টি শিক্ষা পরিবারের সূর্য নামের এক ছাত্রকে হাসপাতালের ৬ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। কয়েকজন ছাত্র তাকে মারধর করেছে, এমন তথ্য জানতে পেরেছি। মামলার বিষয়টি সদর থানা কর্তৃপক্ষ অবগত করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২০ জুন বিকেলে টাঙ্গাইলের সৃষ্টি শিক্ষা পরিবারের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী শিহাব (১২)-এর রহস্যজনক মৃত্যু হয়। পুলিশ অপমৃত্যু মামলা নিলেও সর্বশেষ এ পর্যন্ত মামলার কোন সুরাহা হয়নি। তবে নিহত শিহাবের পরিবারের দাবি তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে, এটি ছিল একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।