টাঙ্গাইলে ফারুক হত্যা: আত্মসমর্পণের পর মুক্তি আবার কারাগারে

আইন আদালত ঘাটাইল টাঙ্গাইল সদর ফিচার রাজনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি আদালতে আত্মসমর্পণের পর আবারও কারাগারে গেছেন।

 

 

 

টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি মনিরুল ইসলাম খান জানান, মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর দুপুরে সহিদুর রহমান খান মুক্তি টাঙ্গাইল প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে আদালতের বিচারক মোঃ মোস্তফা শাহরিয়ার খান তাকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। গত ২০ নভেম্বর উচ্চ আদালত থেকে তিনি ছয়মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেয়ে ২২ নভেম্বর কারামুক্ত হন।

 

আদালত সূত্র জানায়, গত ২৬ নভেম্বর আপিল বিভাগের আদেশের তথ্য গোপনসহ সহিদুর রহমান খান মুক্তি জামিন আবেদন ঘিরে কিছু অসংগতির অভিযোগ তোলে রাষ্ট্রপক্ষ। তার পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তি জামিনাদেশ প্রত্যাহার করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মোঃ রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ওই বেঞ্চ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তিকে টাঙ্গাইলের বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।

আপিল বিভাগ গত ২৭ আগস্ট এক আদেশে সম্ভাব্য ছয়মাসের মধ্যে মামলার বিচার কাজ শেষ করতে বিচারিক আদালতে নির্দেশ দেন। এতে তথ্য গোপন বিষয়টি নজরে নিয়ে হাইকোর্ট আত্মসমর্পণের ওই আদেশ দেন।

গত ২২ নভেম্বর কারামুক্ত হওয়ার পর সহিদুর রহমান খান মুক্তি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর দুপুরে হুইল চেয়ারে বসে সহিদুর রহমান খান মুক্তি আদালতে আসেন। এ সময় তার বাবা টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খান এবং তার ভাই সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা তার সঙ্গে ছিলেন।

২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর সহিদুর রহমান খান মুক্তি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। মাঝে গত বছর অন্তর্বর্তী জামিন ১৮ দিন কারাগারের বাইরে ছিলেন।

২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ তার কলেজ পাড়ার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার তিনদিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। এ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে ২০১৪ সালের আগস্টে পুলিশ আনিসুল ইসলাম ও মোহাম্মদ আলী নামের দুইজনকে গ্রেপ্তার করে। এই দুইজনের দেওয়া স্বীকারোক্তিতে তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান কাকন ও ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে গোয়েন্দা পুলিশ আদালতে আমানুর রহমান খান রানা ও অপর তিন ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বর্তমানে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *