নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সহিদুর রহমান খান মুক্তি জামিনে মুক্ত হয়েছে। তিনি উচ্চ আদালতের আদেশে বেলা ২ টার দিকে কারামুক্ত হন। সহিদুর রহমান খান মুক্তির নিয়োজিত আইনজীবী মুহাম্মদ নাসিরউদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মুক্তিলাভের পরেই তিনি তার শহরের কলেজ পাড়াস্থ বাসভবনে এসে শারীরিক অসুস্থ্যতাজনিত কারণে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
তার ভাই সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা জানান, সহিদুর রহমান খান মুক্তি জামিনে মুক্ত হয়ে বাসায় আসে। দীর্ঘদিন জেলে থাকায় মানসিকভাবে সে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তার অক্সিজেন লেভেল খুব কম। তাই চিকিৎসার জন্য জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের (১৮ জানুয়ারি) টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমদের গুলিবিদ্ধ লাশ তার কলেজ পাড়ার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার হয়। এ ঘটনার তিনদিন পর নিহত ফারুক আহমদের স্ত্রী নাহার আহমদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
এই হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ২০১৪ সালের আগস্টে গোয়েন্দা পুলিশ আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ আলী নামে দুই জনকে গ্রেপ্তার করে।
আদালতে এ দুইজনের দেওয়া স্বীকারোক্তিতে হত্যার সঙ্গে তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রিয় সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। এরপর অভিযুক্তরা আত্মগোপনে চলে যান।
পরে, আমানুর রহমান খান রানা ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আত্মসমর্পণ করেন। প্রায় তিন বছর হাজত বাসের পর তিনি জামিনে মুক্তি পান। অভিযুক্ত সহিদুর রহমান খান মুক্তি দীর্ঘ ছয় বছর পলাতক থাকার পর ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। এরপর দফায় দফায় জামিনের আবেদন করলেও আদালত প্রতিবারই আবেদন নামঞ্জুর করেন। ২০ নভেম্বর সোমবার উচ্চ আদালত থেকে সহিদুর রহমান খান মুক্তি ৬ মাসের জামিন লাভ করেন। বুধবার উচ্চ আদালতের জামিনের আদেশ টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক শাহরিয়ার মোস্তফা খান যাচাই বাছাই শেষে ৫০ হাজার টাকায় মুচলেখায় বেলবন্দ দাখিলের আদেশ দেন।
পরবর্তীতে তার নিয়োজিত আইনজীবী মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন খান আদালতে বেলবন্দ দাখিল করেন। পরে আদালত থেকে তার জামিননামা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। কারাগার থেকে তিনি মুক্তি লাভ করেন। তাদের অন্য দুই ভাই জাহিদুর রহমান খান কাকন এবং সানিয়াত খান বাপ্পা এখনও আত্মগোপনে রয়েছেন।