নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলে ধর্ষণ মামলার বাদী এশা মির্জার (১৭) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত যুবক সৌরভ পালের একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সে মৃত এশা মির্জার বন্ধু এবং শহরের থানাপাড়া এলাকার শ্যামল পালের ছেলে।
টাঙ্গাইল আদালতের পরিদর্শক তানবীর আহম্মেদ জানান, আজ মঙ্গলবার শুনানি শেষে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পশুপতি বিশ্বাস তাঁর একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
গত শনিবার বিকেলে টাঙ্গাইল শহরের বোয়ালী এলাকার একটি বাসা থেকে এশা মির্জার লাশ পাওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে সিআইডির ক্রাইম সিন দল রাতে লাশটি উদ্ধার করে। ওই রাতেই ওই কিশোরীর বড় বোন লুনা মির্জা বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে ২জনকে আসামী করে মামলা করেন। মামলার পরই পুলিশ সৌরভ পালকে গ্রেপ্তার করে। এছাড়াও ওই কিশোরীর ভাই জনি মির্জাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু ছালাম মিয়া জানান, গ্রেপ্তার সৌরভ পালকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে গতকাল সোমবার আদালতে পাঠানো হয়।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনেরা জানান, শনিবার দুপুর ১২টার দিকে ঘুমানোর কথা বলে ওই কিশোরী নিজের কক্ষের দরজা বন্ধ করে। কক্ষে ঢোকার আগে নিজের পাঁচ মাস বয়সী সন্তানকে ওই বাসায় অবস্থানরত এক আত্মীয়ের কাছে রেখে যান। কিছুক্ষণ পর শিশুটি কান্নাকাটি শুরু করে। ওই আত্মীয় তখন দরজায় ধাক্কা দিয়ে কিশোরীকে ডাকাডাকি শুরু করেন। কিন্তু কোনো সাড়াশব্দ পাননি। খবর পেয়ে বিকেলে চারটার দিকে পুলিশ ওই বাড়িতে গিয়ে ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৫ এপ্রিল ওই কিশোরী টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি, জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব এবং টাঙ্গাইল-২ (গোপালুর-ভূঞাপুর) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনিরের ভাই গোলাম কিবরিয়া বড় মনির বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেছিল। মামলার এজাহারে ধর্ষণের কারণে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। মামলায় গোলাম কিবরিয়া উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেন। পরে নিম্ন আদালতে হাজির হলে আদালত গোলাম কিবরিয়াকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ৩০ জুন টাঙ্গাইল শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ওই কিশোরী পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। পরে আদালতের নির্দেশে ওই কিশোরীর গর্ভে জন্ম নেওয়া শিশুর ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। ৯ অক্টোবর নবজাতকের ডিএনএ টেস্টের ফল পক্ষে আসায় ধর্ষণ মামলার আসামি বড় মনিরকে জামিন দিতে আপিল বিভাগের বেঞ্চ আদেশ দেন। পরে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন। ধর্ষণের এই মামলাটি টাঙ্গাইলের পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করছে।