কালিহাতী উপজেলাতে অবকাঠামোগত উন্নয়নে বদলে গেছে জীবনমান

অর্থনীতি কালিহাতী পরিবেশ ফিচার

বিশেষ প্রতিবেদক: গত ৫ বছরে কালিহাতী উপজেলায় প্রত্যন্ত চরাঞ্চলসহ উপজেলার সর্বত্র ঘটেছে ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়ন। বিশেষ করে বদলে গেছে এই উপজেলার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মান। প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের কৃষকের ফলানো ফসল দ্রুতই পৌঁছে যাচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

 

 

উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত ৫ বছরে উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনের উন্নয়ন হয়েছে ১১৮টি। আধুনিক ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ হয়েছে ২টি। ৮৪ কি. মি. সড়ক উন্নয়ন এবং ৬৫ কি. মি. সড়ক মেরামত করা হয়েছে। ব্রিজ নির্মাণ হয়েছে ১১’শ ৪৮.০০ মিটার। নতুন করে কালিহাতী উপজেলা কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়েছে। ৩টি হাট-বাজারের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়েছে। এছাড়া, উপজেলার ১টি পুকুর ও ১টি খাল খনন করা হয়েছে।

 

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস (পিআইও) সূত্রে জানা যায়, গত ৫ বছরে উপজেলায় বন্যা আশ্রায়ন কেন্দ্র হয়েছে ১টি, মুজিব কেল্লা ১টি, সেতু/ কালভার্ট ১০টি, দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ তৈরি হয়েছে ২৪টি। এছাড়া উপজেলার ভূমিহীন ও গৃহহীদের আশ্রায়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ২৯৪ ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। টিআর-কাবিখার মাধ্যমে ১’শ ৪৩ কি. মি. রাস্তা সংস্কার করা হয়েছে। সোলার ষ্টিট লাইট লাগানো হয়েছে ১৬৯টি। এছাড়া ১৯২টি পরিবারকে সোলার লাইটের আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়া বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ১৩২টি বীর নিবাস তৈরি করা হয়েছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের এই প্রকল্পগুলি বাস্তবায়নে ব্যয় হয়েছে ৩’শ ৩৭ কোটি ৫০ লাখ ৩১ হাজার টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদপ্তর (পিআইও) বাস্তবায়নে ব্যায় হয়েছে ৬ কোটি ৪৩ লাখ ৬৭ হাজার টাকার টাকা। এছাড়াও টিআর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১১ কোটি ৩৪ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। আর কাবিখা/ কাবিটার নগদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৯ কোটি ৭৩ লাখ ২৯ হাজার ৯’শ ৮২ টাকা। এছাড়া ৮০৫.৬৫৭৫ মেট্রিক টন চাল ও ৭৭০.৮১৩৮ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

কালিহাতীতে গত ৫ বছরের ৪০২ কোটি ৩৪ লাখ ৩২ হাজার ৩১৭ টাকার উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ফলে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া।

উপজেলার দশকিয়া ইউনিয়নের ধলাটেঙ্গর গ্রামের কৃষক ছেকাম আলী, আনোয়ার হোসেন, চাঁন মিঞা, সহিদুল ইসলাম জানান, আমাদের ধলাটেঙ্গর গ্রামে কয়েক বছর পূর্বেও রাস্তাঘাটের বেহালদশা ছিলো। বিশেষ করে বৃষ্টির সময় এলাকায় চলাচল করা অসম্ভব ছিলো। এছাড়া রাস্তা-ঘাট খারাপ থাকায় খেতে উৎপাদিত পণ্য সময়মতো বিক্রি করা যেত না। ফলে এই এলাকার কৃষকরা তাদের উৎপাদিত খাদ্য শস্যের ন্যায্য দাম পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতো। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের ফলে এখন আমরা উৎপাদিত খাদ্য-শষ্য রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠাতে পারছি এবং ন্যায্য মূল্যে পাচ্ছি।

কালিহাতী এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ হোসেন ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সেহাবউদ্দিন বলেন, গত ৫ বছরে দুই অধিদপ্তর ৪০২ কোটি টাকা ৩৪ লাখ ৩২ হাজার ৩১৭ টাকার উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ফলে উপজেলার যোগাযোগের ক্ষেত্রে ঘটেছে একটি নিরব বিপ্লব।

টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের সংসদ সদস্য হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারী বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পর সারাদেশে ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় কালিহাতী উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন কাজ হয়েছে। আমি এমপি হওয়ার পূর্বে উপজেলার মোট রাস্তার মাত্র ১৫ ভাগ রাস্তা পাকা ছিলো। গত ৫ বছরে উপজেলার ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ রাস্তা পাকাকরণ করা হয়েছে। যদি করোনা মাহামারির কারনে ২ বছর নষ্ট না হতো তাহলে এতদিনে শতভাগ কাঁচা রাস্তা পাকা হয়ে যেতো। যদি আমি আবার এমপি হিসেবে নির্বাচিত হতে পারি প্রথম দুই বছরে সকল কাঁচারাস্তা পাকাকরণ করে ফেলবো।

তিনি আরও বলেন, উপজেলার ১৭২ টি বিদ্যালয়ের (প্রাথমিক ও মাধ্যমিক) ১৬৫টি বিদ্যালয় ভবন পাঁকা করা হয়েছে এবং বাকি ভবনগুলো পাঁকাকরণের কাজ চলমান রয়েছে। বর্তমানে কালিহাতী উপজেলায় কোন বাঁশের সাঁকো নেই। আমি আশাবাদী, আগামী নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নৌকা মার্কায় আমাকে কালিহাতীর জনগণ পুনরায় এমপি নির্বাচিত করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *