ভূঞাপুর প্রতিনিধি: ভূঞাপুরের তরুণ উদ্যোক্তা নাহিদ হাসান ঝরে পড়া সুপারি গাছের পাতার খোল দিয়ে যন্ত্রের সাহায্যে পরিবেশবান্ধব বাহারি সব পণ্য তৈরি করছেন। শতভাগ প্রাকৃতিক, জীবাণুবিয়োজ্য, কেমিক্যাল ও প্লাস্টিকমুক্ত, কম্পোস্টেবল এবং ডিসপোজেবল হওয়ায় স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সচেতন মানুষের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এসব পণ্য।
তরুণ উদ্যোক্তা নাহিদ হাসান ভূঞাপুর উপজেলার বাগবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা। বছরখানেক আগে প্রায় ১০ লাখ টাকায় ভারত থেকে মেশিন এনে এলাকায় ইকো বাজার নামে কারখানা স্থাপন করেন তিনি। বর্তমানে তার তৈরি করা এসব পণ্য এলাকায় সাড়া ফেলেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সুপারি গাছের ঝরে পড়া পাতার খোল ধুয়ে-মুছে যন্ত্রের ছাঁচে ফেলে নির্দিষ্টমাত্রার তাপে তৈরি করা হচ্ছে ওয়ান টাইম প্লাস্টিক পণ্যের বিকল্প পণ্য। এতে দিনে এক হাজার বিভিন্ন রকমের পণ্য তৈরি করা হচ্ছে। আবার তৈরি করা এসব পণ্যে রংঙের আঁচড় দেওয়া হচ্ছে। যাতে পণ্যটি দেখতে আরও সুন্দর দেখা যায়। এতে বেশি দামেও বিক্রি করা যায়। তার কারখানায় সুপারি পাতার খোলের ১০ ইঞ্চির স্কয়ার প্লেট, রাউন্ড প্লেট, থ্রি পার্টিশন প্লেট, ট্রে, প্রিচসহ ৮ ধরনের পণ্য তৈরি করা হয়। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেকেই এসব পণ্য দেখতে আসেন।
জানা গেছে, সুপারি গাছের পাতার খোল দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করেন উদ্যোক্তা নাহিদ হাসান। এছাড়া এলাকার মানুষজনও সুপারির গাছের খোল সংগ্রহ করে রেখে সেগুলো বিক্রি করে। স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সচেতন রেস্টুরেন্ট মালিক ও ক্রেতাদের কাছে দিন দিন সুপারি গাছের খোলের এসব পণ্যের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। এছাড়াও গায়ে হলুদ, জন্মদিনের মতো অনুষ্ঠানসহ ঘর সাজাতেও ব্যবহার করা হচ্ছে এসব পণ্য।
স্থানীয়রা জানান, সুপারি পাতার খোল জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হতো। অথচ এগুলো দিয়ে এতো সুন্দর বাহারি রকমের পণ্য তৈরি করা যায় সেটা ধারণা ছিল না। অনেক বেকার তরুণ-যুবকরা নাহিদের এমন উদ্যোগের সফলতা দেখে তারাও আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
কারখানায় কাজ করা শ্রমিকরা জানান, সুপারি গাছের পাতা ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করার পর তা শুকাতে হয়। এরপর যন্ত্রের মাধ্যমে নিদিষ্ট তাপমাত্রা দিয়ে মেশিনের ৬টি ডাইসে বিভিন্ন আইটেমের প্রাকৃতিক এসব ওয়ান টাইম পণ্য তৈরি করা হয়।
তরুণ উদ্যোক্তা ইকো বাজার কারখানার প্রতিষ্ঠাতা নাহিদ হাসান বলেন, টেক্সটাইল নিয়ে পড়াশোনা করে একটা চাকরি করতাম। করোনার সময় চাকরি ছেড়ে দিয়ে নিজে কিছু করার ইচ্ছে থেকে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে কারখানাটা করেছি।তার কারখানায় চারজন যুবক কাজ করেন। অনেক বেকার যুবক দেখতে এসে তারাও এমন কারখানা করার ইচ্ছা প্রকাশ করছেন।
ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ বেলাল হোসেন বলেন, আমি তরুণ উদ্যোক্তা নাহিদ হাসান-এর তৈরি পণ্য দেখেছি। মানুষ ও প্রকৃতির জন্য উপকারী এসব পণ্যের প্রচার-প্রসারে সকল রকমের সহযোগিতা করা হবে।