টাঙ্গাইলে মা নার্সিং হোম ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ

অপরাধ টাঙ্গাইল সদর ফিচার স্বাস্থ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলে মা নার্সিং হোম ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

 

 

বুধবার, ২৫ অক্টোবর শহরের আকুরটাকুর পাড়ায় মা নার্সিং হোম এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ভুল চিকিৎসার শিকার শিরিন আক্তার (৪৫) সখিপুর উপজেলার হাতীবান্ধা ইউনিয়নের চাকদহ গ্রামের জয়নাল মিয়ার স্ত্রী।

জানা যায়, শিরিন আক্তারকে গত সোমবার, ২৩ অক্টোবর পিত্তথলির পাথর অপারেশনের জন্য মা নার্সিং হোম এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করানো হয়। এরপর বুধবার সন্ধ্যায় পিত্তথলির পাথর অপসারণের জন্য অপারেশন কক্ষে নেওয়া হয়। এর পর সেখানেই শিরিন আক্তারের মৃত্যু হয় । তার স্বামী ও স্বজনরা তাৎক্ষণিকভাবে ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুললে এ নিয়ে ক্লিনিকে অশান্ত পরিবেশের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি টাঙ্গাইল মডেল থানায় অবহিত করা হলে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

নিহতের স্বামী জয়নাল মিয়া বলেন, প্রথমে আমার স্ত্রীকে ঢাকা ক্লিনিকে ভর্তি করি, ঢাকা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ আমার স্ত্রীর অবস্থা দেখে অপারেশন করতে অপারগতা প্রকাশ করে, টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন। আমরা সদর হাসপাতালে না নিয়ে বাড়ি নিয়ে যাই। পরবর্তীতে আমরা আবার চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইল নিয়ে এসে মা নার্সিং হোম এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডাক্তার দেখাই। ডাক্তার দেখার পর তারা সেখানে ভর্তি হতে বলে এবং তারা জানায়, আমার স্ত্রীর পিত্তথলির পাথর অপারেশন তারা এখানেই করবে। আমরা ভর্তি করি। ভর্তি করার পর থেকে আমরা স্ত্রীর প্রেসার অনিয়ন্ত্রিত থাকায় আমরা অপারেশন করতে অসম্মতি জানাই।

কিন্তু মা নার্সিং হোম এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লোকজন আমাদের মিথ্যে আশ্বাস দিয়ে অপারেশন করেন। অপারেশন কারার সময় অবহেলায় আমার স্ত্রী মৃত্যুবরণ করে। আমার স্ত্রী শিরিন আক্তারকে যদি ভর্তি না করতো, তাহলে ভুল চিকিৎসায় আমার স্ত্রী আজ মৃত্যুবরণ করত না। আমরা ওই ডাক্তার ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

এ বিষয়ে দায়িত্বরত ডাক্তার ফরিদ আহমেদ সাথে যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। ক্লিনিক কতৃপক্ষের কাছে অ্যানেস্থেসিয়ার ডা. আনোয়ার সাদাত এর মোবাইল নম্বর চাইলে তারা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।

ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ক্লিনিকের মালিক কামাল বলেন, যখন কোন প্রাইভেট ক্লিনিকে রোগী মারা যায়, তখন ডাক্তার ও ক্লিনিকের অবহেলায় রোগী মারা যাওয়ার অভিযোগ উঠে। আমরা যেহেতু ক্লিনিকের ব্যবসা করি, দায়িত্ব নিয়ে কাজ করি। আমরা চাই না কারো প্রাণনাশ হোক। এই রোগীর ক্ষেত্রে তার প্রেসার নিয়ন্ত্রিত ছিল না। যখন দেখেছি তার প্রেসার নিয়ন্ত্রণে তখনই আমরা অপরেশন করেছি।

মৃত শিরিন আক্তারের ভাতিজা মোঃ রাহাত মিয়া জানান, রোগীর স্বজনদের থানায় মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছায়। এরপর থানা পুলিশের মধ্যস্থতায় ক্লিনিক কতৃপক্ষ শিরিন আক্তারের স্বামীর কাছ থেকে টিপসই রেখে তাদের পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে লাশ বের করে দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *