মির্জাপুর প্রতিনিধি: মির্জাপুরে ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে শুক্রবার রণদা প্রসাদ সাহার শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে দেশের ঐতিহ্যবাহী দানবীর রণদা প্রসাদ সাহার বাড়ির পূজামণ্ডপ এ বছর দেশি-বিদেশি পর্যটক ও ভক্তদের জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রণদার বাড়ির শণের ঘরঘেঁষা আশানন্দ মিলনায়তনের সামনে পূজার ঘরসহ আশপাশ নানা রঙে সাজানো হয়েছে। নানা সাজে রাঙানো হয়েছে পুরো কুমুদিনী চত্বর। অতিথিদের লৌহজং নদ পারাপারের জন্য দুটি বজরা নৌকা সাজানো হয়েছে।
আন্ধরা শিল্পী সংঘ পূজামণ্ডপ কমিটির সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার সাহা বলেন, জন্মের পর থেকেই তারা রণদার মণ্ডপে বিপুল উৎসাহের মধ্য দিয়ে পূজার আনন্দ উপভোগ করেন। প্রবীণদের কাছ থেকে তারা জেনেছেন, ছেলে জন্মের পর থেকে রণদা মহাঅষ্টমীর দিনে হাজারো মানুষের মধ্যে কাপড় বিতরণ শুরু করেন, যা দীর্ঘদিন অব্যাহত থাকে। পূজার সময় ঢাকবাদকেরা ১২ জোড়া ঢাক বাজাতেন। পাশে থাকা নবহতখানা থেকে যন্ত্রের মাধ্যমে কলকাতা থেকে আনা সানাইয়ের ক্যাসেট বাজানো হতো, যা মানুষকে মুগ্ধ করত।
ভারতেশ্বরী হোমসের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক, কবি ও সাহিত্যিক হেনা সুলতানা জানান, রণদার পূজামণ্ডপের মূল আকর্ষণ ভারতেশ্বরী হোমসের মেয়েদের আরতি অনুষ্ঠান। এবারও তাদের পরিবেশনায় প্রতিদিনই সন্ধ্যার পর থেকে পূজার আনুষ্ঠানিকতাসহ আরতি হবে। এ আরতি অনুষ্ঠান প্রতিদিন সন্ধ্যার পর দেবীর বোধন (ষষ্ঠী) থেকে নবমীপূজার দিন পর্যন্ত চলবে। অনুষ্ঠানে কুমুদিনী মেডিকেল কলেজ এবং কুমুদিনী নার্সিং স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরাও অংশ নেবেন। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের বরণ করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
কুমুদিনী কল্যাণ সংস্থার পরিচালক (শিক্ষা) প্রতিভা মুৎসুদ্দি জানান, তিনি (রণদা) সবসময় সর্বজনীন পূজা করতেন। আগে ধর্মান্ধতার কারণে যারা পূজা করতেন, তারা হিন্দু ছাড়া কাউকে মন্দিরে ঢুকতে দিতেন না। কিন্তু রণদা বলতেন, মায়ের সন্তান সবাই। এ জন্য মায়ের মন্দিরে সবারই যাওয়ার অধিকার রয়েছে।
মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম জানান, শারদীয় দুর্গাপূজার উৎসব নির্বিঘ্নভাবে পালনের জন্য কয়েক স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা রাখা হয়েছে।