কালিহাতীর লাঙ্গলজোড়া উচ্চবিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ: পরীক্ষা স্থগিত

কালিহাতী দুর্নীতি ফিচার শিক্ষা

কালিহাতী প্রতিনিধি: কালিহাতীর লাঙ্গলজোড়া উচ্চবিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক ও কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় স্কুল কমিটির সদস্যদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা অফিসের উদ্যোগে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং নিয়োগ পরীক্ষাও স্থগিত হয়েছে।

 

 

 

লাঙ্গলজোড়া উচ্চবিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির কয়েকজন সদস্যের দাবি, সহকারী প্রধান শিক্ষক ও কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদের জন্য সভাপতি দুজনের কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা নিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে কমিটির অন্য সদস্যরা প্রতিবাদ করে সভাপতির কাছে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করতে অনুরোধ করেন। কিন্তু তার পরও স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি ১৮ অক্টোবর নিয়োগ পরীক্ষার দিন নির্ধারণ করেন। পরে ওই কমিটির সদস্য বিল্লাল মণ্ডল, উজ্জ্বল মোল্লা, ইসমাইল হোসেন গত ১৬ অক্টোবর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করেন।

স্থানীয়দের দাবি, কোনোভাবেই যেন স্কুলটিতে নিয়োগ বাণিজ্য না হয়। তারা চান, মেধার ভিত্তিতে যেন নিয়োগ দেওয়া হয়। তাহলে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে।

লাঙ্গলজোড়া গ্রামের কামাল হোসেন বলেন, আমরা চাই না এই স্কুলে কোনো দুর্নীতি হোক। আমরা চাই একটি স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একজন ভালো শিক্ষক আসুক। একই গ্রামের ছোলাইমান মণ্ডল বলেন, শুনতাছি স্কুলের স্যার নিয়োগে নাকি লেনদেন হচ্ছে। যদি টাকার লেনদেন হয়ে থাকে তাহলে এলাকাবাসী মেনে নেবেন না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবেন।

স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটির সদস্য উজ্জ্বল মোল্লা জানান, সভাপতি তার ভগ্নিপতি গিয়াসকে দিয়ে আমাকে ১ লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু আমি রাজি হইনি। স্কুলে সঠিকভাবে নিয়োগ কার্যক্রম চলবে, এটাই প্রত্যাশা।

আরেক সদস্যকেও উৎকোচ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে সভাপতি আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে। কমিটির সদস্য বিল্লাল মণ্ডল বলেছেন, রাতের আঁধারে সভাপতি তার ভগ্নিপতিকে দিয়ে আমার কাছে ২ লাখ টাকা পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু স্কুলের কোনো ঝামেলার মাঝে আমি যেতে রাজি হইনি। সভাপতি ২৫ লাখ টাকা দুই পদের নিয়োগের জন্য নিয়েছে বলে গিয়াস আমাকে বলেছেন।

লাঙ্গলজোড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিনহাজ উদ্দিন বলেন, আমরা এই নিয়োগের বিষয়ে কিছুই জানি না। সব জানেন সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক।

প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বললেন, আমি কিছুই জানি না, এ বিষয়ে সবকিছু জানেন সভাপতি সাহেব। আমি নামেই প্রধান শিক্ষক।

লাঙ্গলজোড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতির ভগ্নিপতি গিয়াসের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি ও তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা ভাইস চেয়ার‌ম্যান মোঃ আক্তারুজ্জামান বলেন, আপনারা লিখে যা করতে পারেন, করেন। আমি কারও থেকে এক টাকাও নিইনি। ম্যানেজিং কমিটির ১৩ জন সদস্য আছে; ৩ জন অভিযোগ দিলে কী হবে। কিছুই হবে না।

টাঙ্গাইল জেলা শিক্ষা অফিসের ট্রেনিং কো-অর্ডিনেটর আব্দুল মান্নান বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করেছি। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তসাপেক্ষে পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *