ভূঞাপুর প্রতিনিধি: ভূঞাপুর উপজেলার ইসলামী এজেন্ট ব্যাংকে রাখা গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় একজন গ্রাহক আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। ব্যাংক থেকে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় অন্য গ্রাহকরা জমা টাকা উত্তোলণ করে নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
জানা যায়, ভূঞাপুরে ২০১৯ সালে ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট শাখার অনুমোদন পায় এসএম ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী দেওয়ান সাইফুল ইসলাম। শুরুর পর থেকে তার আত্মীয় দিয়ে ব্যাংকের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে এজেন্ট শাখার মালিক দেওয়ান ইসলাম। তবে মালিক দেশের বাইরে যাওয়ার কারণে তার ছেলে দেওয়ান রেজাউল করিম রাব্বী শাখাটির দায়িত্ব পালন করছেন।
ব্যাংকে মালিকের আত্মীয় দেওয়ান লুৎফর শাওন একাউন্ট ওপেনিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময় প্রতারণা করে গ্রাহকদের জমা করা টাকা ভূয়া ভাউচার দিয়ে আত্মসাত করে। তিন মাসে ব্যাংকের ১১জন গ্রাহকের কয়েক লাখ টাকা কৌশলে আত্মসাৎ করার ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার পর তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
কিন্তু এখন পর্যন্ত গ্রাহকের কোন টাকা ফেরত দেয়া হয়নি। পরে টাকা না পেয়ে মোছাঃ তাসলিমা খাতুন নামের একজন গ্রাহক ১ লাখ ২৬ হাজার টাকার জন্য আদালতে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু তাসলিমা আদালতে মামলা দায়ের করার পর থেকেই এজেন্ট ব্যাংকের মালিকের ছেলে তাকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
গ্রাহকরা জানান, কষ্ট করে টাকা জমিয়ে ব্যাংকে রেখেছি। কিন্তু সেখানেই প্রতারণা করে টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। ইসলামী ব্যাংকের অফিসার টাকা আত্মসাত করলেও তাকে আইনের আওতায় না দিয়ে চাকুরিচ্যুত করে দায় সেরেছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেয়ার কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
ইসলামী এজেন্ট ব্যাংকে প্রতারিত গ্রাহক তাসলিমা খাতুন জানান, সরল বিশ্বাসে ব্যাংকে গিয়ে টাকা জমা দেই। ব্যাংকের অফিসার শাওন আমাকে জমা ভাউচার দিয়ে বলে টাকা জমা হয়েছে। পরে খোঁজ নিয়ে দেখি হিসাব নম্বরে কোন টাকা জমা হয়নি। পরে টাকাতো ফেরত দেয়নি উল্টো হুমকি দেয়া হচ্ছে। পরে গত ১৩ ফ্রেব্রুয়ারিতে আদালতে মামলা দায়ের করেছি। মুল ব্যাংক কর্তৃপক্ষও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। আমার মতো অনেক গ্রাহকের টাকা আত্মসাত করা হয়েছে।
ভূঞাপুর ইসলাম এজেন্ট ব্যাংকের মালিক রেজাউল করিম রাব্বী বলেন, কয়েকজনের গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করায় শাওন নামের একজন অফিসারকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্ব এজেন্ট ব্যাংকের মালিকের নয়। ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি উর্ধ্বতন ব্যাংক কর্মকর্তারা জানেন। একজন গ্রাহক মামলা করেছেন তাতে আমাদের কিছু করার নেই।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ এর এলেঙ্গা শাখার ব্যবস্থাপক মোঃ গোলাম মাসুদ বলেন, ব্যাংকে আমার যোগদানের আগের ঘটনা এটি। যে সকল গ্রাহকের টাকা আত্মসাত করা হয়েছিল তাদের টাকা ফেরত দেয়ার জন্য বলা হয়েছিল। আদালতে মামলা হওয়ার ঘটনা আমার জানা নেই।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, টাঙ্গাইল শাখার ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মাসুদ হাকিম খান বলেন, ওই এজেন্ট ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ বা দেখভালের দায়িত্ব এলেঙ্গা শাখার। এজেন্ট ব্যাংকটির দেখভালের দায়িত্ব আমাদের নয় বিধায় এ প্রসঙ্গে আমরা কিছু বলতে পারছি না।