দেলদুয়ার প্রতিনিধি: দেলদুয়ারে সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর গাড়ি বহরে বাঁধা ও ভাংচুর করার অভিযোগ উঠেছে তার আপন ছোট ভাই মুরাদ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে। এ সময় দুই ভাইয়ের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এছাড়াও একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। ১৯ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার সকালে দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল-সিলিমপুর সড়কের দশকিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী ও মুরাদ সিদ্দিকীর অনুসারীরা জানায়, মঙ্গলবার সকালে ১৯ টি গাড়ির বহর নিয়ে আতিয়া মাজার জিয়ারত করতে যাচ্ছিলেন আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ও তার ছোট ভাই মুরাদ সিদ্দিকী। সঙ্গে দুজনেরই কর্মী-সমর্থকরা ছিলেন। পথে দশকিয়া এলাকায় মুরাদ সিদ্দিকী ও তার লোকজন বড় ভাই আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর গাড়িবহরে বাধা দেন। এছাড়া আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর সমর্থকদের মারধর করেন মুরাদ সিদ্দিকী।
ঘটনাস্থলে লতিফ সিদ্দিকী পৌঁছলে মুরাদ সিদ্দিকী চলে যাওয়ার সময় তাদের দুই ভাইয়ের সমর্থকদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে মুরাদ সিদ্দিকীর বহরে থাকা পাঁচটি গাড়ির মধ্যে একটি মাইক্রোবাসের সামনের গ্লাস ভাঙা হয়। পরে মুরাদ সিদ্দিকী অনুসারীদের নিয়ে তার টাঙ্গাইল শহরের বাসায় চলে যান। পরবর্তীতে লতিফ সিদ্দিকী আতিয়া মাজার জিয়ারত করে কালিহাতীর এলেঙ্গাতে চলে যান।
অভিযোগটি অস্বীকার করে মুরাদ সিদ্দিকী বলেন, আমি, কাদের সিদ্দিকী ভাই ও লতিফ সিদ্দিকীর ভাই। মাজার জিয়ারত শেষে বাসায় চলে এসেছেন। ওখানে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, বিএনপির নেতা কর্মীরা ঘোষণা দিয়েছেন অক্টোবর মাসে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উৎখাত করবে। আমার বিবেক থেকে এটা প্রতিহত করতে হবে। আমি তো সন্ত্রাস কোন কালেই করি নাই। এটা প্রতিহত করতে হলে জনগণের কাছে যেতে হবে। সে জন্য কালিহাতীর জোকারচর ও গোহালিয়াবাড়ি এলাকায় এসেছি। কোনো সভা-সমাবেশ না করে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করতে এসেছি। নেতাকর্মীদের বলছি, নিজেরা ঐক্যবদ্ধ হও। স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি ও সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেবেন ১৪ দলের নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ন্যাড়া তো বেলতলা একবারই যায়। ২০১৮ সালে নির্বাচনে এসে আমি তা বুঝেছি। তখন আমার ৮০ ভাগ ভোট ছিল। আমি খুনাখুনির মধ্যে থাকি না বলে চলে গেছি। আমি কোনো নির্বাচনের জন্য আসি নাই।
মুরাদ সিদ্দিকীর পক্ষে সাবেক মন্ত্রী আরও বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে আমার ৪/৫ জন কর্মীকে সে মারধর করছে বলে তারা (অনুসারীরা) এ বিষয়ে নালিশ করেছে। মুরাদ সিদ্দিকী বিভিন্নজনকে মোবাইলে হুমকি দিচ্ছে, সেটি আমি জানি। এলেঙ্গার মেয়রকে সে ভয় দেখাচ্ছে। আমি তাকে কখনও রাজনৈতিক নেতা মনে করি নাই। সে ঠিকাদার ও সন্ত্রাসী। এর বাইরে তাকে নিয়ে আমি কোন চিন্তা করি নাই। ছাত্র রাজনীতি ও আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিল আজাদ সিদ্দিকী। আমার জানা মতে মুরাদ সিদ্দিকী কোন দিন আওয়ামী লীগও করে নাই, ছাত্রলীগও করে নাই। তাই তাকে নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথা নাই।
দেলদুয়ার থানার অফিসার ইনচার্জ নাছির উদ্দিন মৃধা (পিপিএম) জানান, ঘটনাস্থলে তিনি নিজে ছিলেন। হামলা বা ভাঙচুরের কোন ঘটনা ঘটেনি। তবে দুইপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে।