নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইল শহরে ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত রিকশার দৌরাত্ম্য বাড়ায় প্রতিদিন তীব্র যানজটে যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। শহরে অতিরিক্ত ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করাসহ কয়েকটি সড়কের উন্নয়ন কাজ চলায় এ যানজট তীব্র আকার ধারণ করেছে।
টাঙ্গাইল শহরে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করছে। এখন এসব যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। ১০ মিনিটের সড়ক পাড়ি দিতে দ্বিগুণেরও বেশি সময় লাগছে। যানজট নিরসনের জন্য পৌরসভা ও ট্রাফিক বিভাগের বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন হলেও বাস্তবে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ কাজে লাগছে না।
টাঙ্গাইল শহরের নতুন বাস টার্মিনাল থেকে ইজিবাইকে করে যাত্রা শুরু করে শান্তিকুঞ্জের মোড় পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার সড়ক পাড়ি দিতে আধা ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। নতুন বাস টার্মিনাল থেকে ইজিবাইকে করে আসতে জেনারেল হাসপাতাল গেট, জেলা সদর গেট, কুমুদিনী সরকারি কলেজের মোড়, সৃষ্টি স্কুলের মোড়, পুরোনো বাসস্ট্যান্ড, বড় কালীবাড়ি মোড়, নিরালা মোড় এলাকাতেও যানজটে পড়তে হয়। এরপর মেইন রোডে আধা কিলোমিটারও কম সড়ক অতিক্রম করতে যানজটে নাকাল হতে হয় যাত্রীদের। অথচ নতুন বাস টার্মিনাল থেকে এই সড়ক ইজিবাইকে পাড়ি দিতে ১০ মিনিটের বেশি লাগার কথা নয়।
শহরের আদালত পাড়া এলাকার ব্যবসায়ী লিটন সাহা জানান, সকাল থেকে শহরের সব গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ইজিবাইকের জট লেগে থাকে। স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করা যায় না।
কাগমারী এলাকার বাসিন্দা শাহিন চাকলাদার জানান, শহরের মেইন রোডের আধা কিলোমিটার সড়ক যেতে ১৫-২০ মিনিট লেগে যায়। যানজট নিরসনের জন্য ইজিবাইক ও রিকশা চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।
এদিকে শহরের ব্যস্ততম টাঙ্গাইল জেলা সদর সড়কে উন্নয়নকাজ চলছে। ওই সড়কে এখনো পিচঢালাই করা হয়নি। নিরালা মোড় থেকে জেলা সদর লেক পাড় পর্যন্ত এক কিলোমিটারেও বেশি সড়ক খানাখন্দে ভরা। তাই এই সড়কে দু-একটি রিকশা ছাড়া কোনো যানবাহন চলছে না। ফলে অন্য সড়কগুলোয় চাপ বেড়েছে।
টাঙ্গাইল পৌরসভা কার্যালয় সূত্র জানায়, টাঙ্গাইল শহরে চলাচলের জন্য ৪ হাজার ২০০ ইজিবাইক ও ৫ হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। যানজট এড়াতে ৪ হাজার ২০০ ইজিবাইক জোড় ও বিজোড় সংখ্যায় ভাগ করা হয়েছে। সকাল থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত এক ভাগ এবং বেলা দুইটা থেকে রাত পর্যন্ত আরেক ভাগের ইজিবাইক চলাচল করার নির্দেশনা দিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু নিয়ম মেনে চলছেন না ইজিবাইক চালকেরা। তারা ইচ্ছেমতো যে কোনো সময় সড়কে নামার কারণে বাড়ছে যানজট।
পৌরসভা সূত্র আরও জানায়, শহরের জেলা সদর সড়কের উন্নয়নের কাজ চলছে দীর্ঘ প্রায় এক বছর ধরে। এই সড়কের যানবাহনের চাপ অন্য সড়কগুলোর ওপর পড়ছে। তাই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
পৌরসভার মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীর জানান, ইজিবাইক দুই পালায় চলাচলের জন্য ভাগ করে দেওয়া হলেও অনেকে এ নিয়ম মানছেন না। এসব ইজিবাইকের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত পৌরসভা ব্যবস্থা নিচ্ছে। এ ছাড়া কয়েকটি রাস্তার উন্নয়ন কাজ চলছে। এসব রাস্তার নির্মাণ কাজ শেষ হলে যানজট অনেকটাই কমে আসবে।
টাঙ্গাইলের ট্রাফিক পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন জানান, অতিরিক্ত ইজিবাইক চলাচল করায় শহরে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। যানজট নিরসনে ট্রাফিক বিভাগ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।