দেলদুয়ার প্রতিনিধি: টাঙ্গাইল-দেলদুয়ার সড়কের সেহড়াতৈল দুল্যা বেইলি সেতুটির জায়গায় নির্মাণ করা বেইলি সেতুটি গত শুক্রবার রাতে বালিভর্তি ট্রাকসহ চতুর্থবারের মতো ভেঙে পড়েছে। এ সড়কে চলাচলকারীরা নৌকায় করে পারাপার হচ্ছেন। আবার কেউ ঘুরে বিকল্প সড়ক দিয়ে যাতায়াত করছেন। শ্রমিকেরা ভাঙা পাটাতন সরিয়ে মেরামতের কাজ শুরু করেছেন। তবে ট্রাকটি এখনো পানি থেকে তোলা হয়নি এবং এর মালিকের সন্ধানও মেলেনি।
দেলদুয়ার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান মারুফ জানান, এই বেইলি সেতুর কারণে দেলদুয়ারের মানুষকে প্রায়ই দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এখানে একটি স্থায়ী কংক্রিটের সেতু নির্মাণের জন্য সড়ক বিভাগের কাছে বিভিন্ন সময় দাবি জানানোসহ জেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভায়ও বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ বিভিন্ন সময় কংক্রিটের সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিলেও কোনো কাজ হয়নি।
টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আলিউল হোসেন জানান, এই বেইলি সেতুর জায়গায় একটি আরসিসি সেতু করার জন্য প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু হবে।
সড়ক বিভাগ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, টাঙ্গাইল থেকে দেলদুয়ারের ১২ কিলোমিটার দূরত্বের এই সড়কে গত তিন দশকে কয়েক দফা উন্নয়ন হয়েছে। দুই বছর আগে ৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটি সম্প্রসারণ করার পর থেকে এই সড়কে যানবাহন চলাচল বেড়ে গেছে। টাঙ্গাইল থেকে মানিকগঞ্জগামী বাস, ট্রাক চলাচলসহ ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানজট হলে বিকল্প সড়ক হিসেবে দেলদুয়ার হয়ে যানবাহন চলাচল করে। ফলে সড়কটিতে ভারী যানবাহন চলাচল আগের থেকে অনেক বেশি বেড়েছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, সেহড়াতৈল দুল্যা এলাকার ওই ডোবার ওপর আগে কাঠের সেতু ছিল। ১৯৮৮ সালের বন্যায় কাঠের সেতু ভেসে যায়। পরে ১৯৮৯ সালে এখানে বেইলি সেতু স্থাপন করা হয়। এই সেতুতে বিভিন্ন সময় পাটাতনে যানবাহনের চাকা আটকে চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ২০১৭ সালের জুলাই মাসে সারবাহী ট্রাকসহ সেতুটি ধসে পরে। এরপর আরও দুবার সেতু ভেঙে যাওয়ার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় লোকজন বলেন, শুক্রবার রাত একটার দিকে টাঙ্গাইল থেকে দেলদুয়ারের দিকে বালুবাহী ট্রাক যাচ্ছিল। বেইলি সেতু অতিক্রম করার সময় সেটি ট্রাক নিয়ে ভেঙে পড়ে। এরপর থেকে এ সড়কে চলাচল বন্ধ রয়েছে। সেতুর ওই স্থানে ঝুঁকি নিয়ে নৌকা দিয়ে চলাচলকারীদের পারাপার হতে হচ্ছে। অনেকে মোটরসাইকেল নিয়ে নৌকা করে পারাপার হচ্ছেন।
দেলদুয়ার মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কার্যালয়ের প্রশিক্ষক মীর শরিফুল ইসলাম জানান, সেতু ভেঙে যাওয়ায় টাঙ্গাইল থেকে করটিয়া মটড়া হয়ে দেলদুয়ারে গিয়ে অফিস করতে হয়েছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আবদুল মোমেন জানান, ভেঙে যাওয়া বেইলি সেতুর মেরামতের কাজ চলছে। মেরামতকাজ শেষ করে সেতুটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
দেলদুয়ার থানার ওসি নাসির উদ্দিন মৃধা জানান, ওই ট্রাকটির মালিকের কোনো সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি। ট্রাকটির মালিকানার দাবি নিয়ে কেউ আসেনি। খোঁজ করেও মালিকের সন্ধান মেলেনি।