গোপালপুরে ধর্ষণচেষ্টা মামলায় জামিন পেয়ে বাদ্য বাজিয়ে ভুক্তভোগীর উঠোনে উল্লাস!

গোপালপুরে ধর্ষণচেষ্টা মামলায় জামিন পেয়ে বাদ্য বাজিয়ে ভুক্তভোগীর উঠোনে উল্লাস!

গোপালপুর ফিচার

গোপালপুর প্রতিনিধি: স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার মামলায় জামিন পেয়ে বাদ্য বাজিয়ে ভুক্তভোগীর উঠোনে উল্লাস করেছে আসামি। একইসাথে গলায় মালা ঝুলিয়ে ব্যান্ডপার্টিসহ পুরো গ্রাম ঘুরেছে।

 

শনিবার, ২৬ আগস্ট ভিকটিমের মা এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার, ২৪ আগস্ট আদালত থেকে জামিন পেয়ে রাত ৯টার দিকে এ কাণ্ড ঘটায় সে।

 

অভিযুক্ত আসামির নাম আলেপ শেকের বাড়ি গোপালপুর উপজেলার উড়িয়াবাড়ী গ্রামে। আর ভিকটিম গোপালপুরের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১০ বছর বয়সী চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী।

 

গোপালপুর থানা সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ জুলাই কাঁঠাল খাওয়ানোর কথা বলে ওই মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় আসামি আলেপ শেখ। এ ঘটনায় গোপালপুর থানায় মামলা হলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়। গত বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) আদালত থেকে জামিন নিয়ে রাত ৯টার দিকে গলায় মালা ঝুলিয়ে ব্যান্ডপার্টি নিয়ে গ্রামে প্রবেশ করে। ব্যান্ডপার্টির সাথে তার আত্মীয়সহ বেশ কয়েকজন উৎসুক মানুষ যোগ দেয়। তারা নেচে গেয়ে পুরো গ্রামে উল্লাস করে।

 

একপর্যায়ে আলেপ শেখ দলবল নিয়ে বাদির উঠোনে নাচানাচি শুরু করে। এ সময় সে গালিগালাজ ও মারপিটেরও হুমকি দেয়। এ বিষয়ে ওই মেয়েটির মা শনিবার, ২৬ আগস্ট থানায় অভিযোগ দেন। বর্তমানে দিনমজুর বাবা-মা অসহায় শিশুটিকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাই পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছেন তারা।

 

উড়িয়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আছিয়া বেগম বলেন, শিশুটি খেলাধুলা ও সংস্কৃতিতে বেশ ভালো। এমন ঘটনায় শিশুটি একদম চুপষে গেছে। কয়েক দিন সে স্কুলেও আসেনি। ব্যান্ডপার্টির ঘটনায় ওই শিশু আর তার অসহায় পরিবার নিরপত্তাহীনতায় ভুগছে। আমরা এর কঠিন বিচার চাই। যাতে ভবিষ্যতে এমন অপরাধ কেউ করার সাহস না পায়।

 

শিশুটির মামা বলেন, আমার বোন অসহায়। আসামিরা অত্যন্ত প্রভাবশালী। জামিনে বের হয়ে যে কাণ্ড করেছেন এটা কেউ করে না। আমরা যথাযথ বিচার চাই। অভিযোগের বিষয়ে মামলার প্রধান আসামি আলেপ শেখের ছেলে জীবন বলেন, আমাদের সঙ্গে তাদের বাপ-দাদার আমল থেকে বিরোধ চলছে। এ মামলাটি মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক।

হেমনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান তালুকদার বলেন, ধর্ষণচেষ্টা মামলায় জামিন পেয়ে কোনো আসামি এভাবে বাদ্যবাজনা বাজিয়ে আনন্দ উৎসব করে বলে আমার জানা নেই। এতে ভিকটিম শিশুটি আরো নিরাপত্তাহীনতা ও সম্মানহানীতে পড়েছে। আমরা অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও হেমনগর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই বশির আহমেদ বলেন, জামিন পাওয়ার পর বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে গ্রামে আনন্দ উৎসব করার অভিযোগ সত্য। ধর্ষণচেষ্টার মামলারও সত্যতা মিলেছে। দ্রুতই আদালতে চার্জশিট দেয়া হবে।

গোপালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোশারফ হোসেন বলেন, বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে আসামি দলবল নিয়ে বাদি ও ভিকটিমের বাড়িতে গিয়ে গালিগালাজ ও হুমকির অভিযোগে থানায় জিডি করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *