টাঙ্গাইলে সংবাদ সম্মেলনের পর স্বামীর পৌনে দুই কোটি টাকা ফেরত পেলেন স্ত্রী

টাঙ্গাইলে সংবাদ সম্মেলনের পর স্বামীর পৌনে দুই কোটি টাকা ফেরত পেলেন স্ত্রী

টাঙ্গাইল টাঙ্গাইল সদর ফিচার

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বামীর মৃত্যুর পর টাকা উত্তোলনের দাবিতে সোমবার দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে মৃত লুৎফরের স্ত্রী মোছা. সুলতানা। এর পরপরই টাকা ফেরত দেয় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড টাঙ্গাইল শাখা কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, ১০ বছর আগে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড টাঙ্গাইল শাখায় এক কোটি টাকা সঞ্চয় রেখেছিলেন লুৎফর রহমান নামের এক ব্যক্তি। টাকা রাখার তিন বছর পর লুৎফর রহমান মারা যান। ওই হিসাব নম্বরে চলতি বছরের গত জুন পর্যন্ত লাভসহ এক কোটি ৭৩ লাখ ৭৭ হাজার টাকা জমা হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে এই টাকা উত্তোলনের জন্য বারবার ব্যাংকে যাওয়া হলেও আজও পর্যন্ত উত্তোলন করতে পারেননি।

লুৎফরের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড টাঙ্গাইল শাখার ম্যানেজার এই টাকা নিয়ে নানা তালবাহনা শুরু করেছেন। ম্যানেজারকে ব্যাংকের আইন সম্পর্কে অবগত করলেও টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে তিনি নানা অজুহাত দেখাতে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মোছা. সুলতানার ছেলে ফাহাদ রহমান। মোছা. সুলতানা শহরের সাবালিয়া এলাকার বাসিন্দা।

সংবাদ সম্মেলনে মোছা. সুলতানা জানান, ২০১৩ সালের ১৯ আগস্ট তার স্বামী লুৎফর রহমান ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড টাঙ্গাইল শাখায় এক কোটি টাকার সঞ্চয় রাখেন। সঞ্চয়ে মোছা. সুলতানাকে নমিনী করেন লুৎফর রহমান। ২০১৬ সালের ১১ জুন লুৎফর রহমান মৃত্যুবরণ করেন। লুৎফর রহমানের মৃত্যুর সুলতানা নমিনী হিসেবে টাকা উত্তোলন করতে ব্যাংকে যান। ব্যাংক থেকে সুলতানাকে জানানো হয় টাকার জন্য লুৎফর রহমানের বাবা মোসলেম উদ্দিন সাকসেশন সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নিষ্পতি না হওয়া পর্যন্ত সুলতানাকে টাকা দেয়া যাবে না বলে ব্যাংক থেকে জানানো হয়।

মামলাটি আদালত ‘ব্যাংক কোম্পানী আইনের ১০৩ ধারানুসারে নমিনী হিসাবের সমস্ত টাকা উত্তোলনের একমাত্র অধিকারী মর্মে প্রতীয়মান হয়। এ ক্ষেত্রে প্রার্থীপক্ষ আইনগত প্রতিকার প্রাপ্তি অধিকারী নন মর্মে আদালতের নিকট প্রতিয়মান হয়।’ পরে ফাউন্ডিং দিয়ে গত ৩১ জুলাই মামলাটি খারিজ করেন। ৬ আগস্ট পুনরায় টাকা উত্তোলনের জন্যে ব্যাংককে গেলে শাখা ব্যবস্থাপক বিভিন্ন আইন দেখিয়ে সুলতানাকে টাকা দেননি।

সুলতানা বেগম আরও জানান, ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক তাদের নানাভাবে হয়রানি করছেন। শাখা ব্যবস্থাপক টাকা না দিয়ে তিনি অনিয়ম করছেন। এতে তারা মানসিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সব মিলিয়ে তারা সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। নমিনী হিসেবে লুৎফর রহমানের টাকা ফেরত দেয়ার জোর দাবি জানান মোছা. সুলতানা।

মোছা. সুলতানার ছেলে ফাহাদ রহমান বলেন, সংবাদ সম্মেলনের খবর জানার পর ব্যাংক থেকে ডেকে নিয়ে টাকাগুলো আমাদের অন্য অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করে দিয়েছেন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, টাঙ্গাইল শাখা প্রধান ভাইস প্রিন্সিপাল মোহাম্মদ মাছউদ হাকিম খান বলেন, এ বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোন প্রকার মন্তব্য করা যাবে না। তবে বিকেলে টাকা ফেরতের বিষয়টি তিনি স্বীকার করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *