নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘উৎসবমুখর’ হলে আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা জানিয়ে গত জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির শরিক কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম বলেছেন, দেশের মানুষ যদি ভোট দেয় আর ভোট যদি চুরি করা না হয়, তাহলে সেটাই হবে সংবিধান মত একটি নির্বাচন। কিন্তু গত বেশ কয়েক বছর মানুষ ভোট দিতে পারে না। শয়তানরা ভোট দেয়। দিনের ভোট রাতে হয়।
শনিবার (১২ আগস্ট) বিকালে শহরের সোনার বাংলা কমিউনিটি সেন্টারে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের টাঙ্গাইল জেলা শাখার বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় আমরা যখন জোটে গিয়েছিলাম আজও অনেকে মনে করেন আমরা বিএনপির জোটে গিয়েছিলাম। আমি কখনও মনে করি না, আমি এক মুহুর্তের জন্যও বিএনপির জোটে গিয়েছিলাম। ড. কামালের জন্য ঐক্যফ্রন্টে গেয়েছিলাম।
বিএনপির অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে যাবে না, এটা তারা বলতেই পারে। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল তাদের মতামত ব্যক্ত করতে পারে। আওয়ামী লীগও তো নির্বাচনে না যেতে পারে। বিএনপি-আওয়ামী লীগ যদি নির্বাচনে না যায়, আর দেশে যদি নির্বাচন হয় আর সেই নির্বাচনে যদি ভোটাররা অংশগ্রহণ করতে পারে এবং অংশগ্রহণমূলক ভোট হয় তাহলে কারও কোনও দ্বিধা থাকার কথা না।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনেরও সমালোচনা করে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, ভোট চুরি ঠেকাতে নাকি সকালে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে। রাতে কোনো কেন্দ্রে ব্যালট পেপার যাবে না। যারা রক্ষক, তারাই যদি ভক্ষক হয় তাহলে ব্যালট পেপার সকালে গেলেও যা হবে, রাতে গেলেও তা হবে।
অগাস্ট মাস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অগাস্ট মাস আসলে আমার জীবন আপনাআপনি বদলে যায়। মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম মারাত্মক একটি আশা নিয়ে। আমাদের একটি আশা ছিল, পাকিস্তান যেভাবে চলছে বাংলাদেশ সেভাবে চলবে না। বাংলাদেশ হবে সাধারণ মানুষের দেশ। ন্যায়, নীতি, ভালোবাসা ও মানবতার দেশ হবে বাংলাদেশ। প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে, কিন্তু কারো সঙ্গে কারো শত্রুতা থাকবে না। দীর্ঘ ৫৪ বছরে আমরা তা খুঁজে পাইনি।
আমরা এক অর্থে কঠিন অবস্থার মধ্যে আছি। দেশ ভালো চলছে, এটা বলার মত আমার অন্তর থেকে তাগিদ অনুভব করি না। সরকারে যারা আছেন, তারা প্রতি মুহূর্ত মনে করেন দেশ স্বর্গরাজ্য হয়েছে। কিছুদিন আগে এক মন্ত্রী বলেছেন, আমরা বেহেশতে আছি। নির্বোধকে কোনোভাবে বোঝানো যায় না। যদি নিজেরা বোঝে, তাহলে অন্যের বোঝাতে হয় না। আমি খুব অস্বস্তিতে আছি।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের টাঙ্গাইল শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বদিউর রহমান বদির সভাপতিত্বে বর্ধিত সভায় আরও বক্তব্য দেন দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার বীর প্রতীক, কেন্দ্রীয় সদস্য শামীম আল মনছুর আজাদ সিদ্দিকী, বাসাইল পৌরসভার মেয়র রাহাত হাসান টিপু, টাঙ্গাইল জেলার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এ টি এম সালেক হিটলু, সহসভাপতি আব্দুল কুদ্দুস, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল গফুর, সখীপুরের সাবেক মেয়র ছানোয়ার হোসেন, জেলা যুব আন্দোলনের সভাপতি অতিকুর রহমান সাদেক প্রমুখ।