জেলা বিএনপি আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় থাকতে পারছে না

টাঙ্গাইল জেলা বিএনপি আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় থাকতে পারছে না!

টাঙ্গাইল ফিচার রাজনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সম্মেলন গত বছর ১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হলেও এখনও পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠন হয়নি। সম্মেলনে কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করে দুই সদস্যের কমিটি দিয়ে চলছে জেলা বিএনপি। এ অবস্থায় দল সারাদেশের সাথে আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে তালমিলিয়ে সক্রিয় থাকতে পারছে না।

 

জানা যায়, টাঙ্গাইলের এক সময়ের বৃহৎ রাজনৈতিক শক্তির সংগঠন জেলা বিএনপি ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে। ব্যাপক জনসমর্থন থাকা সত্ত্বেও দলটির আন্দোলন-সংগ্রাম মূল শহরের বাইরে বেপারি পাড়ায় ২০০ গজ সড়কের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। পুলিশ অনুমতি না দেওয়ায় মূল শহরে কোন কর্মসূচি পালন করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা।

 

জেলা বিএনপির নেতারা জানান, প্রায় দুই বছরের অধিক সময় ধরে দলটি মূল শহরে কোন কর্মসূচি পালন করতে পারছে না। গত ১৮ জুলাই মূল শহরের ঈদ গাঁ ময়দান থেকে পদযাত্রা শুরু করলেও তা পুরো শহর প্রদক্ষিণ করতে পারেনি। পদযাত্রাটি শুরু পরেই তাদের পাঠিয়ে দেয়া হয় বেপারি পাড়ার দিকে।

 

স্থানীয় বিএনপির একাধিক নেতা জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ সমাবেশ বা সম্মেলন কোন কিছুর জন্যই মূল শহরে কোন মাঠ, পার্ক ব্যবহারের অনুমতি দুই বছরেরও আগে থেকে তারা পাচ্ছেন না। তাই বাধ্য হয়ে মূল শহরের বাইরে কর্মসূচি পালন করতে হচ্ছে। এমনকি গত বছর নভেম্বরে দলের জেলা শাখার সম্মেলন করতে হয়েছে লৌহজং নদের ওপারে কাগমারা এলাকায়। অনুমতি না পেয়ে বাধ্য হয়েই বর্তমানে ব্যাপারি পাড়া এলাকার সরকারি শিশু পরিবারের সামনে থেকে শান্তিকুঞ্জ মোড় এই ২০০ গজের মধ্যে সকল কর্মসূচি পালন করতে হচ্ছে।

 

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সম্প্রতি দেখা যায়, বিক্ষোভ সমাবেশের জন্য নেতাকর্মীদের সরকারি শিশু পরিবারের সামনে সমাবেত হচ্ছেন। সেখানে কয়েক শ নেতা কর্মীর উপস্থিতিতে চার-পাঁচজন নেতা বক্তৃতা করেন। তারপর পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিটি শেষ করে চলে যান।

 

জেলা বিএনপির একাধিক নেতা জানান, পুলিশ অনুমোদনের বাইরে গিয়ে কোন কর্মসূচি পালন করলে গ্রেপ্তার, মামলাসহ নানা হয়রানির মধ্যে পড়তে হয়। গত ১৮ জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচির করতে গিয়ে দলের তিনজন নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাই পুলিশ নির্দেশনা মেনেই মূল শহরের বাইরে তারা কর্মসূচি পালন করছেন।

এ নিয়ে দলটির অনেক নেতা-কর্মীর মধ্যেও রয়েছে বর্তমান নেতৃত্বে প্রতি ক্ষোভ। তাদের বক্তব্য পুলিশের অনুমতি নিয়ে কোন আন্দোলন হয় না। বর্তমান নেতৃত্ব দায়সারাভাবে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করছেন। তারা পুলিশের বেঁধে দেওয়া ছক অনুসরণ করে কর্মসূচি পালন করছেন। তাই প্রত্যেক কর্মসূচিতেই দেখা যায় বেপারি পাড়ার এতিমখানার সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়ে ২০০ গজ অতিক্রম করলেই শান্তিকুঞ্জের মোড়ে পুলিশ বাঁধা দেয়। আর সেখানেই কর্মসূচি শেষ করে দেয়া হয়। এর মধ্যেই ফটোসেশন করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে কর্মসূচি পালনের কথা প্রচার করা হয়।

টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার ছাইদুল হক জানান, আন্দোলন কর্মসূচি পালন করতে গেলে পুলিশ বাঁধা দিবেই। বাঁধা পেলে আন্দোলন আরো জোড়দার হয়। কিন্তু বর্তমান নেতৃত্ব পুলিশের নির্দেশনা মেনে মূল শহরের বাইরে কর্মসূচি পালন করছে। এভাবে কর্মসূচি পালন করে আন্দোলন কিভাবে জোরদার হবে তা বোধগম্য নয়।

টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল জানান, মূল শহরে কর্মসূচি পালনের অনুমতি পাওয়া যাচ্ছে না। তাই শহরের বাইরে কর্মসূচি পালন করতে হচ্ছে। সামনে আন্দোলন আরও জোরদার হচ্ছে। তখন হয়তোবা কোন নিষেধাজ্ঞা মানাও সম্ভব হবে না। নিষেধাজ্ঞা দিলে তা অমান্য করেই আন্দোলন করতে হবে পুরো শহরে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *