গোপালপুর প্রতিনিধি: গোপালপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে লাম্পি স্কিন ডিজিজ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এ রোগের নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা না থাকায় লাম্পি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বাছুর গরু মা’রা যাচ্ছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর জানিয়েছে, উপজেলার হেমনগর, ঝাওয়াইল, হাদিরা, নগদা শিমলা ইউনিয়নে এই রোগ বেশি ছড়িয়েছে। এবার ভাইরাসের ভ্যারিয়েন্ট একটু ভিন্ন হওয়ায়, বাছুর গরুর আক্রান্তের হার বেশী।
রবিবার, ৩০ জুলাই নগদা শিমলা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম ঘুরে জানা যায়, বিগত সপ্তাহে চাঁনপুরের প্রবাসী আব্দুল কাদের, বনমালী পূর্বপাড়ার শাফি, চরচতিলার আম্বিয়া বেগম ও আনোয়ার হোসেন, জোতবাগলের নজরুল সুতার ও আল আমিনের একটি করে গরু লাম্পি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মা’রা গেছে।
উত্তর বিলডগা গ্রামের ইকবাল হোসেন বলেন, আমার গরুও কিছুদিন আক্রান্ত হয়েছিলো, নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা না থাকায়, পরিচিত একজন প্রাণী চিকিৎসককে দিয়ে ছয় হাজার টাকার চিকিৎসা করিয়ে শেষে আশা ছেড়ে দেই, পরে ভূঞাপুরের এক প্রাণী চিকিৎসকের চিকিৎসায় আমার গরু সুস্থ হয়। আমাদের গ্রামে অনেক গরু আক্রান্ত রয়েছে। এছাড়া, কয়েকদিন আগে আমার বোন জামাইয়ের একটি গরু মা’রা গেছে।
বনমালী গ্রামের সুমন মিয়া বাছুরের গায়ে বড় ফোসকা দেখিয়ে বলেন, গ্রাম্য একজন প্রাণী চিকিৎসককে সাতশত টাকা ভিজিট দিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছি, এখন পর্যন্ত সুস্থ হচ্ছে না। চারিদিকে গরু মা’রা যাওয়ার খবর পাচ্ছি, জানি না আমারটা কি হবে।
চরচতিলা গ্রামের বিল্লাল হোসেনের গোয়ালের বাছুর দেখিয়ে বলেন, কয়েকদিন যাবৎ ভাইরাসে আক্রান্ত বাছুরটি চিকিৎসায় সুস্থ না হয়ে নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে, আরেকটি কিছুটা সুস্থ হয়েছে।
উপ-সহকারী প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা (কৃত্রিম প্রজনন) আলমগীর হোসেন বলেন, ঝাওয়াইল ইউনিয়নের যতগুলো খামার বা গোয়ালে গিয়েছি ফিফটি পার্সেন্ট গরু আক্রান্ত দেখেছি, এখন পর্যন্ত প্রায় আটটি গরু মা’রা যাওয়ার খবর শুনেছি।
লাম্পি স্কিন ডিজিজের নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা না থাকায়, উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর কর্তৃক কৃষক ও খামারিদের সচেতন করতে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে রোগটি সম্পর্কে অবহিতকরণ করা হচ্ছে। আক্রান্ত প্রাণীকে পরিস্কার স্থানে আলাদা মশারীর ভেতর রাখতে বলা হচ্ছে, ভিটামিন সি/লেবু ও খাবার সোডা খাওয়ানো, দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলা হচ্ছে।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. শরীফ আব্দুল বাসেত বলেন, শুধু গোপালপুরে নয় সারাদেশে প্রায় ৬০% গরু লাম্পিতে আক্রান্ত; প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের গাইডলাইন অনুযায়ী চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। আগে বড় গরু আক্রান্ত বেশি হলেও এবার বাছুর আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। কিছু খামারি প্রথমেই পল্লী চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ায়, এদের ভুল চিকিৎসার কারণেও মৃ’ত্যুহার বাড়ছে। তিনি আরো জানান, আপাতত গোট পক্সের টীকা প্রয়োগ করা হচ্ছে। তবে চাহিদা অনুযায়ী সরকারি, বেসরকারি টিকার সাপ্লাই কম।