ভূঞাপুর প্রতিনিধি: ভূঞাপুর উপজেলায় অপহৃত এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণের পর জরুরী সেবা নম্বর ৯৯৯ ফোন করার পরও পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি। উল্টো ভূঞাপুর থানায় মিমাংসার জন্য সালিশি বৈঠকের আয়োজন করলেও অপহৃত স্কুলছাত্রীকে নিয়ে আসামীরা হাজির না হওয়ায় ফয়সালা হয়নি।
এ ঘটনায় স্কুলছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে প্রধান আসামী সাদ্দাম হোসেন (২৪)সহ চারজনের নামে ভূঞাপর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এর আগে অপহরণের পর অপহৃত ছাত্রীর বাবা মা জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ ফোন করেন।
জানা যায়, উপজেলার অলোয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এক হিন্দু ধর্মালম্বী শিক্ষার্থীকে কু-প্রস্তাব দেয় প্রতিবেশি বখাটে সাদ্দাম হোসেন। কিন্তু বখাটের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত বুধবার ভোরে মেয়েটি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘরের বাইরে বের হলে অপহরণকারী সাদ্দামসহ কয়েকজনে মিলে তাকে অপহরণ করে। এই ঘটনায় মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে সাদ্দামসহ অপহরণের সাথে জড়িত চারজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন।
কিন্তু পুলিশ মেয়েটিকে উদ্ধার না করে মেয়েটির বাবাকে থানায় মিমাংসার জন্য প্রস্তাব দেয়। পরে পুলিশের কথা মত শুক্রবার, ২১ জুলাই বিকেলে ওই মেয়েটির বাবাসহ পরিবারের লোকজন থানায় হাজির হলেও আসামীরা হাজির হয়নি।
এদিকে মেয়েটিকে না পেয়ে অসহায় বাবা বিভিন্নজনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। তিনি জানান, আসামী সাদ্দাম তার মেয়েকে প্রতিনিয়ত স্কুলের যাতায়াতের পথে উত্ত্যক্ত করতো। বিষয়টি তার পরিবারকে জানালেও কোন প্রতিকার পায়নি। উল্টো তারা হুমকি দেয় বিয়ে দেয়ার জন্য। পরে গত বুধবার রাতে মেয়েকে অপহরণ করা হয়। এই ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলেও মেয়েকে উদ্ধারে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভূঞাপুর থানার উপ-পরিদর্শক জুম্মন খান বলেন, থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর তদন্ত করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আসামীপক্ষ অলোয়া ইউনিয়ন পরিষদে বসার কথা জানালে মেয়ের পরিবার তা অস্বীকার করেন। শুক্রবার বিকেলে থানায় বসার আয়োজন করা হলেও আসামীরা উপস্থিত হয়নি। পরে মেয়ের পরিবারকে থানায় অভিযোগ দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
অলোয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, এসআই জুম্মন দুইপক্ষকে নিয়ে বসার কথা জানালে আমি তাতে মত দেই। কিন্তু অন্য একটি ইউনিয়নে সম্মেলন থাকার কারণে শনিবার (২২ জুলাই) বসার কথা জানানো হয়। কিন্তু পরবর্তিতে আর কিছু জানি না। অন্যদিকে ছেলে পক্ষ থেকে মেয়েটি হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্মগ্রহণের নোটারী পাবলিক এবং বিয়ে হওয়ার কাবিননামার ফটোকপি দিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলামের মোবাইলে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। অতিরিক্ত সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (কালিহাতী সার্কেল) শরিফুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনাটির তদন্ত চলছে। তবে এই ঘটনা মিমাংসা যোগ্য নয়। অপহৃত মেয়েকে উদ্ধারে চেষ্টা অব্যাহত আছে।