মির্জাপুর প্রতিনিধি: মির্জাপুর উপজেলায় রাস্তার ধারে মানসিক প্রতিবন্ধী নারীর সদ্য জন্ম দেওয়া পিতার পরিচয়হীন সেই নবজাতক ঠিকানা পেয়েছে। তার বর্তমান মা-বাবা হলেন লাল মাহামুদ ও রিয়া মাহামুদ দম্পতি। টাঙ্গাইল জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের মাধ্যমে দত্তক নিয়ে মা-বাবার দায়িত্ব নিলো তারা।
রবিবার, ১৬ জুলাই বিকেলে নিজ কার্যালয়ে জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার শিশুটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভূঞাপুরের লাল মাহামুদ ও রিয়া মাহামুদ দম্পতির কাছে হস্তান্তর করেন।
এ সময়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ওলিউজ্জামান, মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাকিলা বিনতে মতিন, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক শাহ্ আলম প্রমুখসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
শিশু দত্তক নেওয়া ওই দম্পতির বাড়ি ভূঞাপুর উপজেলার নিকলা ইউনিয়নের ভারৈ গ্রামে। জেলা প্রশাসকের শর্ত অনুযায়ী এ দম্পতি শিশুটির নামে একটি ব্যাংকে ১০ লাখ টাকার এফডিআর করেন।
জানা গেছে, ৫ জুলাই ভোর ৬টার দিকে মির্জাপুর উপজেলা সদরের পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে রাস্তার পাশে ছনের ভেতর মানসিক প্রতিবন্ধী এক নারী প্রসব ব্যথায় ছটফট করছিলেন। ছনের ভেতর কাউকে গড়াগড়ি করতে দেখে এগিয়ে যান প্রাতঃভ্রমণে বের হওয়া বাওয়ার কুমারজানী গ্রামের মজিরন বেগমসহ তিন নারী। তাদের চেষ্টায় ওই নারী কন্যা সন্তানের জন্ম দেন।
প্রসূতি নিজের সন্তানকে দূরে সরিয়ে দিলে প্রাথমিক পরিচর্যা শেষে মজিরন বেগম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাকিলা বিনতে মতিনের অফিসে নিয়ে যান। পুলিশের সহায়তায় ওই নারীসহ নবজাতককে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরমধ্যে শিশুটিকে দত্তক নিতে ২৮টি পরিবার জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন।
জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ড যাচাই-বাছাই শেষে ভূঞাপুরের লাল মাহামুদ ও রিয়া মাহামুদ দম্পতিকে নির্বাচন করে। নবজাতককে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হলো।
শিশুটিকে পেয়ে লাল মাহামুদ বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানতে পারি মির্জাপুরে মানসিক প্রতিবন্ধী এক নারী রাস্তায় একটি সন্তান প্রসব করেছেন। আমরা শিশুটিকে দত্তক নিতে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করি। আজ আমরা শিশুটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে পেলাম।
টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, ফুটফুটে নিষ্পাপ শিশুটিকে দত্তক নিতে ২৮টি পরিবার আবেদন করেছিল। আমরা যাচাই করে একটি নিঃসন্তান সক্ষম দম্পতিকে নির্বাচন করতে পেরেছি। এ দম্পতি আমাদের দেওয়া সব শর্ত পূরণ করেছে। আশা করছি শিশুটি এ পরিবারের কাছে ভালো থাকবে।