অগ্রনী-উচ্চ-বিদ্যালয়

অগ্রনী উচ্চ বিদ্যালয় বহিষ্কৃত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের মামলা

অপরাধ টাঙ্গাইল টাঙ্গাইল সদর ফিচার

নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়নের সয়া চাকতা গ্রামের অগ্রনী উচ্চ বিদ্যালয়ের বহিষ্কৃত প্রধান শিক্ষক সৈয়দ ফজলুল হকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের ৩৮ লাখ টাকা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

 

১২ জুলাই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ আলী হোসেন বাদি হয়ে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আমলী আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। এর আগে গত ২০ জুন সৈয়দ ফজলুল হককে চুড়ান্তভাবে বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়।

 

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ৫ মে হতে মোঃ আলী হোসেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আলী হোসেন দায়িত্ব পালনকালে সৈয়দ ফজলুল হকের আর্থিক অনিয়ম, শিক্ষকসহ ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে নানা ধরনের অসৌজন্যমূলক আচরণ পর্যবেক্ষণ করেন। বিষয়টি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য সভাপতিকে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন।

 

এর পর সভাপতি মোঃ আলী হোসেন মৌখিকভাবে ফজলুল হককে একাধিকবার সতর্ক করেন। তারপরও ফজলুল হক সংশোধন না হয়ে আরো বেপোরোয়া আচরণ শুরু করেন। সভাপতি স্কুল কমিটির সকলের সাথে আলোচনা করে সৈয়দ ফজলুল হকের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতির তদন্তের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

 

তদন্ত কমিটি অনুসন্ধান করে জানতে পারেন, প্রধান শিক্ষক আইন বহির্ভূতভাবে বিদ্যালয়ের যাবতীয় হিসাব বই স্কুলে না রেখে অন্যত্র সরিয়ে রাখছে। এছাড়াও তিনি বিদ্যালয়ের বিভিন্ন খাত থেকে আদায়কৃত টাকা ব্যাংকে না জমা করে নিজের খেয়াল খুশিমত সামান্য কিছু খরচ দেখিয়ে বেশির ভাগ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন।

মামলায় আরো জানা যায়, তদন্ত কমিটি ফজলুল হকের দায়িত্ব পালনকালে ২০১৯ সালের জুন মাসে এক লাখ, ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে ১৩ লাখ এক হাজার ৭৮ টাকা, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ১১ লাখ ৮৮ হাজার ৯৯৬ টাকা, ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে আট লাখ ৪২ হাজার ৯৩০ টাকা, ২০২২ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত তিন লাখ ৭০ হাজার ২৬৭ টাকা আত্মসাতের বিষয়টি জানতে পারেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ফজলুল হক ২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে গত ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত মোট ৩৮ লাখ তিন হাজার ২৭১ টাকা প্রতারণামূলকভাবে আত্মসাৎ করেছেন।

এছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চুরির অভিযোগ আনা হয়। নোটিশের মাধ্যমে বিদ্যালয়ে টাকা ও কাগজপত্র জমা দিতে নির্দেশ দেয়া হয় ফজলুল হককে। টাকা ও কাগজপত্র জমা না দেয়ায় ১৪ জুন সভাপতি অন্যান্য সদস্যদের সম্মতিক্রমে মামলার করা সিদ্ধান্ত নেন। ২৬ এপ্রিল বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ আলী হোসেন ফজলুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করেন। ২০ জুন ফজলুল হককে চুড়ান্তভাবে বহিষ্কার করা হয়। ফজলুল হকের দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে শিক্ষকদের ২৪ মাসের স্কুল অংশের বেতন প্রায় ১০ লাখ টাকা বাকি থাকার অভিযোগও রয়েছে।

উপরোক্ত ঘটনা বিষয়ে বিদ্যালয়ের বহিস্কৃত প্রধান শিক্ষক সৈয়দ ফজলুল হকের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *