গোলাম-রব্বানী-ছোটন

নারী ফুটবল জাগরণের নায়ক গোলাম রব্বানী ছোটনের বাফুফে থেকে বিদায়

খেলা ফিচার

সময়তরঙ্গ ডেক্স: গত শুক্রবার আচমকা নারী ফুটবলের দায়িত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেন গোলাম রব্বানী ছোটন। গতরাতে বাফুফে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার ও নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ বরাবর মেইল করে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন তিনি। ৫৪ বছর বয়সী এই কোচ ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে গত ২৮ মে বাফুফেতে পদত্যাগপত্র পাঠালেও শেষ পর্যন্ত ৩৬ দিন পর ছোটনের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।

 

নারী ফুটবলারদের জন্য নতুন কোচ এখনও চূড়ান্ত করতে না পারলেও গোলাম রব্বানী ছোটন নতুন করে শুরু করে দিয়েছেন তাঁর কোচিং ক্যারিয়ার। মঙ্গলবার বাফুফে থেকে পদত্যাগপত্র গ্রহণের চিঠি পেলেও ২ জুলাই থেকে বাংলাদেশ আর্মি নারী দলের কোচের দায়িত্ব পালন করছেন। সেনাবাহিনীর সঙ্গে তাঁর চুক্তিটি অবশ্য দুই মাসের জুলাই-আগস্ট। এর পর প্রিমিয়ার লিগে অন্য কোনো ক্লাবে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা তাঁর।

 

পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার বিষয় নিশ্চিত করে তিনি বলেন, গতকাল রাতে মেইলে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। গত কয়দিনে যা হয়েছে তাতে শরীর খারাপ আমার। মেইল জমা দেওয়ার সময় কোনো আবেগ কাজ করেনি। চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুইজনই। আজ বিকেল জরুরী সভা ডেকেছে বাফুফে কার্যনির্বাহী কমিটি।

 

এতদিন শুধু নারী ফুটবল দলের সঙ্গে কাজ করলেও এবার প্রেক্ষাপট বদলে পুরুষ দলকেও কোচিং করাতে চান বলে জানান ছোটন, এতদিন আমি নারী দলের সঙ্গে কাজ করেছি। এখন আর এর মধ্যে থাকতে চাই না। আমি ক্লাব কোচিং করাব, সেটা নারী-পুরুষ যে দলই হোক। হতে পারে প্রিমিয়ার লিগ, চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ।

 

জানা যায়, গোলাম রব্বানী ‘মানসিক অশান্তি’ নিয়ে বাফুফেতে আর কাজ করতে চান না বলে নারী ফুটবলের দায়িত্ব ছেড়েছেন। অথচ তার হাত ধরেই বাংলাদেশের নারী ফুটবলের জাগরণের শুরু। ২০০৮ সাল থেকে দেশের নারী ফুটবলের সঙ্গে জড়িত হন। তাঁর অধীনে এসেছে নারীদের সকল সাফল্য। সিনিয়র জাতীয় দল এবং বয়সভিত্তিক মিলিয়ে এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাতটি শিরোপা জিতেছে দেশ। নারী ফুটবলে সবচেয়ে বড় সাফল্য ২০২২ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ও এসেছে তাঁর হাত ধরে।

সম্প্রতি দেশের নারী ফুটবলে তৈরি হয়েছে অস্থিরতা। নেমে এসেছে সংকট। গত আট মাস ধরে কোনো ম্যাচ খেলা হয়নি সাবিনাদের। নতুন লিগ আয়োজনের তোর-জোর করলে তা এখনো অন্ধকারে। সব মিলিয়ে হতাশা চেপে বসেছে নারীদের। তাই ফুটবল ছাড়ার সিদ্ধান্তও নিচ্ছেন সাফজয়ী নারীরা। ইতোমধ্যে চার ফুটবলার ছেড়েছেন বাফুফের ক্যাম্প। এর মধ্যে আনাই মোগিনি, সাজেদা খাতুন ও সিরাত জাহান স্বপ্না অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আর আঁখি খাতুন চীনে পাড়ি জমাচ্ছেন।

 

উল্লেখ্য, গোলাম রব্বানী ছোটন ১৯৬৮ সালের ২রা জুলাই বগুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন এবং শৈশব সেখানে অতিবাহিত করেছেন। গোলাম রব্বানী সুপরিচিত একজন সাবেক ফুটবল খেলোয়াড় এবং প্রশিক্ষক হিসেবে। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা দল এবং দেশের বয়সভিত্তিক নারী দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করছেন। ছোটন তাঁর খেলোয়াড় জীবনের অধিকাংশ সময় ফকিরেরপুল এবং আরামবাগের হয়ে একজন রক্ষণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *