ভূঞাপুর প্রতিনিধি: ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যানবাহনের চাপ কম এবং যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক দিয়ে উত্তরবঙ্গের ২৩টি জেলার যানবাহন চলাচল করে। ঈদযাত্রায় স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েকগুণ যানবাহন বাড়ার ফলে যানজট এড়াতে উভয় পাড়ে অতিরিক্ত টোল বুথও বসানো হয়েছে।
ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে সেতুর পূর্ব প্রান্তে গত মঙ্গলবার সকালে কিছুসময় যানজট থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা কেটে যায়। তবে সন্ধ্যার পর মহাসড়কে গাড়ির চাপ আরও বেড়েছে। স্বাভাবিকের চেয়ে মহাসড়কে কয়েক গুণ বেশি যানবাহন চলাচল করলেও রাত পর্যন্ত কোথাও যানজট দেখা যায়নি।
পুলিশ জানায়, গত সোমবার দিবাগত রাতে বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর দুটি গাড়ির সংঘর্ষ ও একটি গাড়ি বিকল হয়ে পড়ায় কিছুক্ষণ টোল আদায় বন্ধ ছিল। তখন হালকা যানজট তৈরি হয়েছিল। তবে আজ সকাল নয়টার মধ্যে সেই জট কেটে যায়। সারাদিন নির্বিঘ্নে নানা পরিবহন চলাচল করেছে। স্বাভাবিকের চেয়ে যান চলাচল ছিল অনেক বেশি হওয়ায় সেতুর টোল প্লাজা থেকে কয়েক কিলোমিটার যানবাহনের সারি লেগে যায়। তবে সেগুলোকে বেশিক্ষণ আটকে থাকেনি।
টোল প্লাজা সূত্র জানায়, স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি যান চলাচল করায় পূর্ব প্রান্তে যানবাহনের ভিড় লেগে আছে। স্বাভাবিক সময় যেখানে ১৫ থেকে ১৬ হাজার যানবাহন চলাচল করে, সেখানে গত রোববার রাত ১২টা থেকে সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত ৪২ হাজার ৫৬০টি যানবাহন সেতু পারাপার হয়েছে।
সরেজমিনে মহাসড়কে কথা হয় ঘরমুখী যাত্রী রাজশাহীর হাবিবুর রহমান বলেন, ঢাকা থেকে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে সাড়ে তিন ঘণ্টায় এলেঙ্গা পর্যন্ত আসতে পেরেছেন, যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে সামান্য বেশি সময় লেগেছে।
বগুড়াগামী মাইক্রোবাসের চালক জুলহাস মিয়া বলেন, সাভার থেকে তিন ঘণ্টার কম সময়ে এলেঙ্গা পৌঁছাতে পেরেছেন। রাস্তায় যানবাহনের চাপ বেশি থাকলেও কোথাও যানজটে আটকে থাকতে হয়নি।
বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম সন্ধ্যায় জানান, সড়কে নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচল করছে। যদি প্রতিকূল আবহাওয়া বা কোন দুর্ঘটনা না ঘটে, তাহলে যানজট হওয়ার কোন আশঙ্কা নেই।
টাঙ্গাইলের ট্রাফিক পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো যানজট হয়নি। তবে সন্ধ্যার পর থেকে সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে।
এছাড়া, ঈদ উপলক্ষে বাড়ী ফেরা যাত্রীদের নিকট থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এলেঙ্গা স্টেশনে কয়েকজন যাত্রী জানান, সবসময় যে ভাড়ায় যাতায়াত করি সে ভাড়া নাই এখন। নরমাল ভাড়ার থেকে ২গুন বৃদ্ধি করা হয়েছে। ৪শত টাকার ভাড়া ১ হাজারের উপরে নিচ্ছে। তারা আরো বলেন, রাস্তায় যানজট নেই, তবে গাড়ি কম পাওয়ায় ভাড়া নিয়ে সমস্যা। সব গাড়ি ঢাকা থেকে যাত্রী ফুল করে আসে।
অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা প্রসঙ্গে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরফুদ্দিন জানান, অতিরিক্ত ভাড়া যেনো না নেওয়া হয় সে জন্য গাড়ির মালিকদেরকে সচেতন করা হয়েছে। পুলিশ এ বিষয়ে সবসময় তৎপর রয়েছে।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক জসীমউদ্দীন হায়দার মহাসড়ক পরিদর্শন করতে গিয়ে বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহায় ঘরমুখী মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মহাসড়কের পাশে ২৭টি গরুর হাট অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, সেতু এলাকায় মাঝে মধ্যে ধীরগতি হলেও এখন যানবাহন স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছে।