সময়তরঙ্গ ডেস্ক : টিভি নাটকে আসার আগে যখন মডেলিং করতো তখন শুনতে হয়েছিল যারা মডেলিং করে তারা অভিনয় পারে না। সেই মডেল আফরান নিশো ‘ইতি মা, উচ্চতর হিসাব বিজ্ঞান, গুল বাহার, ধাঙড়, নীল রোদের ঘ্রাণ, যোগ বিয়োগ, এই শহরে, আপন, মিস শিউলি, দ্যা প্রেস, লায়লা তুমি কি আমাকে মিস করো, কালারফুল, সাদা কাগজে সাজানো অনুভূতি,শেষ চিরকুট, সাহেব মেমসাহেব, ফুলমতি, আঙুর বালা, সোলমেইট, প্রায়শ্চিত্ত, মাই ডিয়ার বাংলাদেশ, বুকের বাপাশে, হোম টিউটর, সহজ সরল ছেলেটা, রাধুনী, শহরে নতুন প্রেমিক, লেটস ফ্লাই, আয়না রহস্য, মাজনু, ভুলজন্ম, বিলোপ, ঘুরে দাড়ানোর গল্প, কায়কোবাদ, ভিক্টিম, চিরকাল আজ,জন্মদাগ এবং গত এক দশকের সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় এবং আলোচিত টিভি নাটক “পুনর্জ্জন্ম” সিরিজ এর মতো কাজ করে নিজেকে টিভি নাটকের কোথায় নিয়ে এসেছে সেটা এই প্রজন্ম নিজ চোখে দেখেছে।
কয়েক বছর আগে ওটিটির আগমন হলো তখন আবার শুনতে হয়েছে নাটক ও ওয়েব ফিকশন এক না। যারা ইউটিউবে ফ্রিতে নাটক দেখে সেই দর্শক কখনো টাকা খরচ করে ওটিটিতে তাকে দেখবে না। এর পর মানুষটা “দ্বিতীয় কৈশোর, বিউটি এন্ড দ্যা বুলেট, মাইনকার চিপায়, মরিচীকা, রেডরাম, কাইজার, সিন্ডিকেট” এর মতো কাজ করে ওটিটিতে নিজেকে দর্শকদের মাঝে উজাড় করে দিলেন।
এছাড়া বিগত কয়েক বছর ধরে শুনতে হয়েছে সিনেমা কেনো করে না সে, সিনেমাতে আসলে বোঝা যাবে কত বড় মাপের অভিনেতা হয়েছে হ্যান ত্যান ইত্যাদি। এরপর ঘোষণা আসে সিনেমায় অভিষেক হচ্ছে নিশোর তখন আবার শুনতে হয়েছে নাটক আর সিনেমা এক না। মানুষ টাকা খরচ করে নাটকের অভিনেতাদের সিনেমা হলে গিয়ে দেখবে না ইত্যাদি।
গোটা একটা জেনারেশন দীর্ঘ সময় ধরে মুখিয়ে আছে শুধু নিশো’কে বড় পর্দায় দেখবে বলে অবশেষে রায়হান রাফির পরিচালনায় আগামী ঈদুল আযাহা’তে নিশো “সুড়ঙ্গ” সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় আসছে। “সুড়ঙ্গ” সিনেমার নিশোর ফাস্টলুকের একটা টিজার রিলিজ পায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে নিশোর ফাস্ট লুকের সেই টিজারটি। নিশোর ভক্ত থেকে শুরু করে দর্শকদের আগ্রহের তুঙ্গে এখন “সুড়ঙ্গ” সিনেমা।
এই মানুষটা কখনো অভিনয়ের সাথে আপোষ করেনি, কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে সে শুধু অভিনয়টাকে ভালোবেসে কাজ করে গেছে/ যাচ্ছে আর তার সুফল তিনি কতটা পেয়েছেন বা আমরা তাকে কতটা দিতে পেরেছি জানি না।
বড় পর্দায় নিশোর এন্ট্রি কেমন হবে সেটা তো সময় বলে দিবে। তবে বরাবরের মতো নিশো এবারো তার অভিনয় দিয়েই ঐ সব লোকগুলোর মুখে ঝামা ঘষে দিবে যারা এখনো বলে বেড়াচ্ছেন যে নিশোর সিনেমা কেউ টিকেট কেটে হলে দেখতে যাবে না।
২০০৫ সালে বাংলাভিশনে প্রচারিত গাজী রাকায়েতের পরিচালনায় ঘরছাড়া নাটকের মধ্যদিয়ে তার নাটকে অভিনয় জীবন শুরু হয়। প্রথম নাটক করেই সকলের নজর কাড়েন তিনি এবং এর পরে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি নিশোকে।
টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুর উপজেলার অলোয়া ইউনিয়নের ভারই গ্রামের কৃতি সন্তান আফরান নিশো। পুরোনাম আহমেদ ফজলে রাব্বি। স্থানীয়ভাবে তাদের বাড়ি ভারই সেন বাড়ি নামে পরিচিত। তিনি ১৯৮৮ সালের ৮ ডিসেম্বর জন্মগ্রহন করেন। তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ ভোলা মিঞা, ভূঞাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক ও টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন।
ছোট বেলা থেকে টাঙ্গাইল শহরে বেড়ে উঠেছেন। নিশো টাঙ্গাইল বিন্দুবাসিনী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। ঢাকা ধানমন্ডি বয়েজ হাই স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। ঢাকা কলেজ থেকে এইচ এস সি পাস করেন।এরপর ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি থেকে গ্রাজুয়েশন করেন।
নিশোর স্মার্ট এন্ড এট্রাকটিভ লুক, ইউনিক এবং দুর্দান্ত ভিন্নধর্মী অভিনয় দিয়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যে আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন এবং কোটি দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। তিনি ৩ শতাধিক নাটকে অভিনয় করেছেন। দেশের অন্যতম ব্যস্ত জনপ্রিয় অভিনেতা নিশো।