সখীপুর প্রতিনিধি: সখীপুরের হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান আল আমিন ভর্তি কোচিং না করেও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়েছেন। বাবা আজিজুল মিয়া ভ্যানচালক ও দিনমজুর। দিনমজুর বাবার সন্তান বুয়েটে পড়াশোনা করার সুযোগ পাওয়ায় এলাকাবাসী গর্বিত।
জানা যায়, আল আমিন উপজেলার কচুয়া গ্রামের আজিজুল মিয়ার ছেলে। কচুয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪.৭২ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। পরে সরকারি মুজিব কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে এবার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। ভর্তি পরীক্ষায় ১০২০তম স্থান অর্জন করে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং (আইপিই) বিভাগে ভর্তির হয়েছেন কৃতি এ শিক্ষার্থী।
আল আমিন বলেন, আমার বাবা-দাদা ভ্যান চালিয়ে আমার পড়াশোনার খরচ চালাতেন। এমন একটি পরিবার থেকে পড়াশোনা করা অনেক কষ্টসাধ্য। আমার বয়স যখন চার বছর, তখন আমার মা মারা যান। আমার বাবা, দাদা-দাদি আমাকে পড়াশোনায় সব সময় উৎসাহ দিতেন। দরিদ্র থাকার পরও পিছপা হয়নি তার বাবা ও দাদা। একজন দক্ষ প্রকৌশলী হয়ে পরিবারের হাল ধরার পাশাপাশি দেশের সেবা করতে চান তিনি।
আল আমিনের দাদা নাজিমউদ্দীন বলেন, আল আমিনের মা মারা যাওয়ার পর থেকেই ভ্যান চালিয়ে তার পড়াশোনার খরচ চালাচ্ছি। বয়স হয়েছে এখন ভ্যান গাড়ি চালিয়ে যা পাই তা দিয়ে পেট চলে না। নাতিকে কিভাবে পড়াবো? তার দাদী আল আমিনের জন্য সবার কাছে দোয়া চান।
আল আমিনের দাদী বলেন, চার বছর বয়সে আল আমিনের মা মারা যায়। তাকে আমি অনেক কষ্ট করে মানুষ করেছি। তার বাবা এবং দাদা ভ্যান চালিয়ে দিনমজুর খেটে সংসার চালায়। নাতিকে ঠিকমতো পড়াশোনার খরচ দিতে পারিনি। ভালোমন্দ খাওয়াতে পারিনি। আজ সে বুয়েটে চান্স পেয়েছে, আমাদের কষ্ট স্বার্থক হয়েছে।
আল আমিনের বাবা আজিজুল মিয়া বলেন, টাকার অভাবে ছেলেকে ভালো কোনো কোচিং সেন্টারে ভর্তি করতে পারি নি। সে নিজে নিজে পড়াশোনা করেই বুয়েটে চান্স পেয়েছে। তিনি আক্ষেপে করে বলেন, ঢাকায় সন্তানকে রেখে পড়াশোনা করাতে গেলে অনেক টাকার দরকার। টাকা কই পাব?
সখীপুর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকৌশলী ফারজানা আলম বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে অভিনন্দন জানাই। আল আমিন একজন নিম্নবিত্ত পরিবারের মেধাবী সন্তান। সখীপুর উপজেলা প্রশাসন সবসময় তার পাশে থেকে সহায়তা করবে।