ঘাটাইল প্রতিনিধি: ঘাটাইল উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় গাছে গাছে এখন লটকনের সমারোহ দেখা যাচ্ছে। বাগানে শোভা পাচ্ছে থোকা থোকা পাকা লটকন। কৃষক আমির উদ্দিনের লটকন চাষে আর্থিক সাফল্য নিয়ে আসায় অনেকে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
উপজেলার সাগরদিঘী ইউনিয়নের শোলাকুড়া গ্রামের আঁকাবাকা পথ পাড়ি দিয়ে এই বাগানের দেখা মেলে। বাগান ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে,
প্রতিটি গাছের গোড়া থেকে পাতাডাল পর্যন্ত ছেয়ে গেছে লটকন ফলে। বাগান নিয়ে খুব খুশি আমির উদ্দিন জানান, টানা পাঁচ বছর ধরে এই বাগান থেকে আয় করছেন তিনি। তার বাগান দেখে লটকন বাগান করতে আগ্রহী হয়ে পরছেন অনেকেই।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ঘাটাইলের পাহাড়ি মাটি লটকন ফল চাষের জন্য খুব উপযোগী। ছোট ছোট অনেক কৃষক লটকন চাষে উদ্ভুদ্ধ হচ্ছে।
কৃষক আমির উদ্দিন জানান, শখ করে তার বাড়ির পাশে পতিত জমিতে অল্প কিছু লটকনের গাছ লাগিয়েছিলেন। শখ করেই দশটি লটকন গাছ দিয়ে ছোট পরিসরে বাগান করেছিলেন তিনি। বাজারে লটকনের চাহিদা এবং দাম ভালো থাকায় অর্থনৈতিকভাবে সফলতা পাচ্ছেন তিনি। এ বছর এক লাখ টাকার উপরে লটকন বিক্রি করতে পারবো। এতে আমার কোনো খরচ নেই। পাইকার বাগানে এসে লটকন কিনে নিয়ে যায়। বিক্রির কোন ঝামেলা পোহাতে হয় না। এখন আমার বাড়ির লোকজনসহ এলাকার অনেকেই লটকন বাগানে আগ্রহী হয়ে উঠছে।
জানা যায়, ঘাটাইল এলাকায় ১০-১৫ বছর আগেও লটকনের তেমন চাহিদা ছিল না; দামও ছিল কম। সেজন্য কেউ লটকনের আলাদা বাগান করার চিন্তা করত না। বর্তমানে টক-মিষ্টি সুস্বাদু এ ফলের চাহিদা ও মূল্য দুটিই বেড়েছে। এমনকি অন্যান্য ফল চাষের তুলনায় লটকনের ফলন বেশি হয় বলে চাষিরাও লাভবান হচ্ছে। গুণগত মান ভেদে লটকন মণপ্রতি ২-৩ হাজার টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করা হয়ে থাকে। পাইকাররা নিজেরাই বাগান থেকে লটকন ক্রয় করে থাকেন। এ উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় উঁচু লালচে অম্লীয় মাটি এবং ছায়ামুক্ত আবহাওয়া থাকায় লটকনের ফলন ভালো হয়ে থাকে।
উপজেলা কৃষি অফিসার দিলশাদ জাহান বলেন, ঘাটাইলের মাটি লটকন উৎপাদনে খুবই উপযোগী। লটকন চাষে পরিশ্রম ও খরচ দুটোই কম। কৃষকরা লটকন চাষ করে তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাচ্ছে। উপজেলায় লটকনের আবাদ আরও বাড়ানোসহ স্বাস্থ্যসম্মত ফল উৎপাদনের জন্য উপজেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট বিভাগ কৃষকদের মাঝে প্রশিক্ষণসহ প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।