নিজস্ব প্রতিবেদক: অবশেষে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিলে অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ ফজলুল হককে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি পেশাগত অসদাচরণ ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে চুড়ান্ত বরখাস্ত করেছেন।
রবিবার বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মোঃ আলী হোসেন লিখিতভাবে চুড়ান্ত বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে তাকে সাময়িক বরখাস্তসহ অভিযোগের বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়।
বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানান, প্রধান শিক্ষক সৈয়দ ফজলুল হক এ বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির সাতে সম্পৃক্ত ছিলেন। বিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে শিক্ষকদের সাথে কোন পরামর্শ ও সমন্বয় না করে এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা করেন ।
বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করলে তিনি শিক্ষকদের লাঞ্চিত ও অপমানিত করেন। এ ছাড়াও তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তিনি সব সময় বিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলা লাগিয়ে রাখতেন। একাধিকবার বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কমিটির সদস্য ও অভিভাবকদের নামে থানায় মামলা ও জিডিও করেছেন। এতে প্রতিষ্ঠানের সম্মান ক্ষুন্ন হয়। পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক সৈয়দ ফজলুল হককে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
ফজলুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি ও পাঁচ সদস্যের অভ্যন্তরীণ অডিট কমিটি গঠিত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় পেশাগত অসদাচরণ ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২৬ এপ্রিল প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তাকে গত ৩০ মে ১৯টি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। প্রধান শিক্ষকের ৬ জুন দেয়া জবাব সন্তোষজনক নয়, মিথ্যা ও মনগড়া বলে দাবি করেন বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি। পরে ১৫ জুন থেকে তাকে চুড়ান্ত বরখাস্ত করা হয় ।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ ফজলুল হকের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আলী হোসেন বলেন, প্রায় চার বছর আগে ফজলুল হক এ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেন। তিনি যোগদানের পর থেকেই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় ২২ মাস ধরে তিনি শিক্ষককের বেতন আটকে রেখেছেন। বিষয়টি নিয়ে অভ্যন্তরীণ অডিট কমিটি গঠন করা হয়। তিনি কাগজপত্র জমা না দিয়ে উল্টো কমিটির বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেছেন।
তিনি আরো জানান, প্রধান শিক্ষক আমাকেসহ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর অভিভাবকসহ প্রায় ১২ জনের বিরুদ্ধে জিডি করেছেন। প্রধান শিক্ষককে নানা অভিযোগে সাময়িক বরখাস্তসহ কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। তার প্রেরিত লিখিত জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় অবশেষে তাকে চুড়ান্ত বরখাস্ত করা হয়।