নিজস্ব প্রতিবেদক: কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম বলেছেন, সাংবাদিকতা খুব পবিত্র জিনিস, যদি তার পবিত্রতা রক্ষা করা হয়। আগে সাংবাদিকদের মানুষ খুব শ্রদ্ধা করতো সম্মান করতো ভালোবাসতো। এখন কিন্তু সেই জিনিসটা নাই। টাঙ্গাইল একটি বড় জায়গা, ঐতিহ্যবাহী জায়গা। টাঙ্গাইলে মওলানা ভাসানী ও শামছুল হকের জন্ম হয়েছে। এরকম উর্বর ভূমি বাংলাদেশে খুব একটা বেশি নাই। কিন্তু আমাদের ঐক্য নাই, একে অপরের প্রতি দরদ নাই।
আমরা নিজেরা নিজেদেরকে নিয়েই ব্যস্ত। যদি সম্ভব হয় আপনারা চেষ্ঠা করবেন সার্বিকভাবে দেশের কল্যাণে কাজ করবেন। কাউকে ছোট নয়, ছোট করায় কোন মাহাত্ম্য নাই, কারো নিন্দা করায় কোন মাহাত্ম্য নাই। ছোটকে বড় করতে পারলে তার মধ্যে মাহাত্ম্য আছে। প্রশংসা করে অপ্রশংসিত কোন মানুষকে যদি তুলে আনা যায় তার মধ্যে মাহাত্ম্য আছে। আমরা আমাদের সম্মান নিয়ে পুরোপুরি থাকতে পারি না। একটা স্বাধীন দেশ, তার একটি আলাদা পরিচয় থাকবে। আজকে যা হচ্ছে এখন যা হচ্ছে, বঙ্গবন্ধু যদি প্রতিক্রিয়াশীলদের সঙ্গে আপস করতেন, তাহলে ১৯৭৫ এ তাকে নিহত হতে হতো না।
সোমবার দুপুরে টাঙ্গাইল শহরের সোনার বাংলা কমিউনিটি সেন্টারে সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম বলেন, একটি দেশের প্রধানমন্ত্রীকে যেভাবে তাচ্ছিল্য করে কথা বলে। এটা সভ্যতা নয়। একজন বয়সী নেতাকে যেভাবে সরকারি দলের নেতা তাচ্ছিল্য করে এটাও ভালো না। আমাদের স্বাভাবিক হওয়ার উচিত ছিলো। কিন্তু যতদিন যাচ্ছে আমরা অস্বাভাবিক হচ্ছি এবং আমাদের মান মর্যাদা আমরা কমাচ্ছি। আমেরিকার কোন মতেই এই ভিসা নীতি করার কোন মানে হয় নাই। একদিন দুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দরকার পড়লে যাবো না সাত সাগরের ওপার যাবো না। অনেকে এ কথার সমালোচনা করেছেন।
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, ভিসা নীতি এটা সব সময় থাকে। যেকোন সরকার তার ইচ্ছামত ভিসা দেয়। আমাদের প্রতিবেশী ভারত, তারাও দুইজন দরখাস্ত করলে একজনেরটা দেয় আরেকজনেরটা দেয় না। এটাও তাদের ইচ্ছামত। এটা পৃথিবীর সবার ইচ্ছামত। বাইরের মানুষ আমাদের দেশে আসে, আমাদের এম্বাসিগুলো ঐ একি কাজটাই করে। স্বাভাবিক থাকলে এই ভিসা নিয়ে কোন কথা আসতো না। ভিসা নিয়ে কথা এসেছে রাজনীতির কারনে। আমি মনে করি, এই ভিসার যে কড়াকড়ি, যাতে নির্বাচনে কেউ বাধা না দেয়। বাধা দিলে তার উপর ভিসার নিষেধাজ্ঞা জারি হবে। এটা আমাদের অপমান করা ছাড়া আর কিছু নয়।
আমরা নির্বাচনে বাধা দিবো, সে বাধা দিলে দেশের প্রচলিত আইনেই বিচার হবে, ব্যবস্থা হবে। সেখানে কিন্তু আমেরিকা, চীন, জার্মান অথবা ফ্রান্স এই সমস্ত বিদেশী শক্তির কিছু করার থাকার কথা না। কিন্তু আমরা দ্বীপে বাস করি না, এক ঘরে বাস করি না পৃথিবীর সবাইকে নিয়েই চলতে হয়। তাহলে স্বাভাবিক বিষয় যেটা সেটাকে অবশ্যই মানতে হবে। আমরা এমন কিছু করবো না যেটা সভ্যতার বাইরে চলে যায়। আমাদের নেতা নেত্রীদের কথা-বার্তা সভ্যতার বাইরে চলে যায়।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব মন্ত্রী বাদ দিয়ে আরো ১০০ জনকে মন্ত্রী বানাতে পারেন। একজন পাগলকেও মন্ত্রী বানাতে পারেন। কিন্তু সংবিধান অনুযায়ী তার পদত্যাগ করার কোন সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, আমি সবসময় মানুষের পক্ষে বা ন্যয়সঙ্গত কারনের পক্ষে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বলে কোন সরকার নেই। কিন্তু বাংলাদেশে হয়েছিল। এখন সংবিধানে নাই। এরশাদকে বাধ্য করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার করা হয়েছিল। রাজনীতিতে আন্দোলনের মাধ্যমে বাধ্য করতে পারলে সেখানে সবই আইন, আর না পারলে সবটাই বেআইনি বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এখন দেখতে হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার যদি অর্জন করতে পারে, দেশে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করে, তাহলে তত্ত্বাবধায়ক হবে। আর না হলে আমার বোনের (প্রধানমন্ত্রী) কোন উপায় নাই তিনি তার প্রধানমন্ত্রীত্ব ছাড়েন।
এ সময় তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোন জোটে যাবো কিনা, জানি না। তবে বিএনপির সাথে কোন জোটে যাবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার খোকা বীরপ্রতিক, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নাসিরউদ্দিনসহ জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্টনিক মিডিয়ার সাংবাদিকসহ অন্যান্য নেতারা।