নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, শ্রীলঙ্কা অনেক পণ্য বাংলাদেশের চেয়ে কম দামে পাচ্ছে। আমাদের মূল্যস্ফীতি হয়েছে, আমাদের মানুষের আয় ইনকাম কমেছে, বেকারত্ব বেড়েছে। একই সঙ্গে আমাদের রিজার্ভ ও আমদানি কমেছে। বাংলাদেশ এখন শ্রীলঙ্কার কাছাকাছি অবস্থান করছে।
সোমবার (১২ জুন) দুপুরে শহরের রাইফেলস ক্লাবে টাঙ্গাইল জেলা জাতীয় পার্টির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখছিলেন।
তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কাকে ফলো করেন, দেখবেন তাদের রিজার্ভ সংকট ছিল। তারা তেল আনতে পারেনি, কয়লা আনতে পারেনি। যার কারণে তাদের বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। একই সঙ্গে তারা বিভিন্ন পণ্য আমদানি করতে পারেনি। সাধারণভাবে মানুষের মধ্যে বিরাট মূল্যস্ফীতি হয়েছিল। সাধারণ মানুষ চাকরি হারাচ্ছিল। পাশাপাশি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি হচ্ছিল। সেখানে বড় কোনো বিরোধী দল ছিল না। মানুষই স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাস্তায় নেমেছে। আমাদের দেশের মানুষ এখনো নামেনি। এটাই শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমাদের পার্থক্য।
তিনি আরও বলেন, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে ঠিক হবে না, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন সবাই চায়। নির্বাচনকালীন সরকারের প্রস্তাব এখনো কোথাও থেকে পাইনি। তবে আমরা দেশের মানুষের কল্যাণের জন্যই কাজ করছি। আগামী নির্বাচনে কিভাবে নির্বাচন করবো সেটা দলগতভাবে আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নিবো।
জিএম কাদের আরো বলেন, ভিসানীতিতে যা বলা হয়েছে তা জনগণের পক্ষে। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন যারা বাধাগ্রস্ত করবে, তাদের সে দেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না। সেখানে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা থাকবে। এখানে অখুশি হওয়ার মতো কিছু দেখি না, সরকারও এখানে অখুশি হয়নি। অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচন কেউ চায় না এ কথা প্রকাশ্যে কেউ বলছেন না। মনে মনে কেউ বলতে পারেন। সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য যে ভিসানীতি আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র এতে সুষ্ঠু নির্বাচনে সহায়ক হবে। এ ভিসানীতি সমর্থন করি আমরা।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক আব্দুস ছালাম চাকলাদারের সভাপতিত্বে আয়োজিত সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব এড. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য আবুল কাশেম, রেজাউল ইসলাম ভূইয়া, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, ঢাকা বিভাগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৫ সালের অক্টোবর শহরের ভাসানী হলে জাতীয় পার্টির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ২০২৩ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সালাম চাকলাদারকে আহ্বায়ক ও মুহাম্মদ মোজাম্মেল হককে সদস্য সচিব করে ১১১ সদস্যবিশিষ্ট জেলা জাতীয় পার্টির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়। দীর্ঘ ৯ বছর পর আজ টাঙ্গাইল জেলা জাতীয় পার্টির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় নেতাদের ছবিসহ ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক, শহরের প্রধান প্রধান সড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় তোরণ, বিলবোর্ড, ব্যানার মিলিয়ে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।