টাঙ্গাইলে গণতন্ত্র মঞ্চের রোড মার্চ: সন্তোষে ভাসানীর মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন

টাঙ্গাইলে গণতন্ত্র মঞ্চের রোড মার্চ: সন্তোষে ভাসানীর মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন

টাঙ্গাইল ফিচার

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ একই স্থানে শান্তি সমাবেশ আহ্বান করায় গণতন্ত্র মঞ্চের রোড মার্চ টাঙ্গাইলে সমাবেশ করতে পারেনি। পরে রোড মার্চের বহর শহরের অদূরে সন্তোষে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এ সময় সন্তোষেও স্থানীয় ছাত্রলীগ কর্মীরা মহড়া দেয়।

মওলানা ভাসানীর মাজারের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শরিক দল গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, আমরা রোড মার্চ করছি গণতন্ত্র মঞ্চের ১৪ দফা মানুষের সামনে তুলে ধরার জন্য। সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্বতী সরকারের অধীনে নির্বাচন, সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর এ ব্যাপারে মানুষ যে ঐক্যবদ্ধ সেটা সরকার বুঝতে পারছে। তাই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে ভয় পাচ্ছে। নানাভাবে এ সব কর্মসূচিতে তারা বাধার সৃষ্টি করছে।

গণতন্ত্র মঞ্চের রোড মার্চ বিকেল চারটায় ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের বাসাইল উপজেলার করাতিপাড়ায় সমাবেশ করার কথা ছিলো। কিন্তু স্থানীয় আওয়ামী লীগ সেখানে একই সময় শান্তি সমাবেশের আয়োজন করে। পরে রোড মার্চ সেখানে না থেমে বিকেল সোয়া ৪টার দিকে ওই এলাকা অতিক্রম করে। বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে রোড মার্চের বহর টাঙ্গাইল পৌর এলাকার সন্তোষে মওলানা ভাসানীর মাজারে যায়। সেখানে স্থানীয় নেতাদের সাথে নিয়ে ভাসানীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়া করেন।

এ সময় মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মীরা মাজার এলাকায় অবস্থান নেয়। তারা সেখানে হৈ-চৈ শুরু করে। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর নেতৃবৃন্দ মাজার এলাকা থেকে বের হয়ে ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরে চলে আসেন।

জোনায়েদ সাকি বলেন, আমরা একটি রোড মার্চে আছি। আমরা সফরকারী। সফররতভাবে আমরা একটা কর্মসূচির জায়গা ঠিক করেছি। পুলিশের দায়িত্ব আমাদের সেই জায়গা নিরাপত্তা দেয়ার। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেখানে শান্তি সমাবেশ ঘোষণা করে। সেখানে পুলিশও তাদের সহযোগী ছিলো। আমাদের কর্মসূচি পালনে কোন বাস্তবতা নেই। আমরা পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেছিলাম। অন্যত্র তারা স্থান ঠিক করে দিক। পুলিশ সে বিষয়ে কোন সহযোগিতা দেয়নি।

তিনি আরো বলেন, আমাদের কর্মসূচি ছিলো ভাসানীর মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদনের। সেটা করেছি। সেখানেও দেখেছি অপ্রীতিকর পরিস্থিতি হয়েছে। নানা দিক থেকে একটা হুমকির পরিস্থিতি তৈরি করে রাখা হয়েছে। যেহেতু মওলানা ভাসানীর কবর জিয়ারত, দোয়া ও শ্রদ্ধা নিবেদনের বিষয়। তাই এর ভাবগাম্ভির্যতা বজায় রাখার বিষয়ে সচেতন ছিলাম।

গণতন্ত্র মঞ্চের রোড মার্চে ১৫টি মাইক্রোবাস ও ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে অন্যান্যের মধ্যে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম। ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম, নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এ দিকে বাসাইল উপজেলা আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ আহবান করলেও তারা করাতিপাড়ায় কোন সমাবেশ করেনি। বিকেলে ওই এলাকায় তিন শতাধিক আওয়ামী লীগ কর্মী অবস্থান নেয়। গণতন্ত্র মঞ্চের রোড মার্চের বহর ওই এলাকা অতিক্রম করে যাওয়ার পর তারা সেখান থেকে চলে যান। এ সময় নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাসাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান গাউস এবং সাধারণ সম্পাদক মির্জা রাজিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *