নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইল শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে দীর্ঘ ৯ বছর পর শনিবার, ২৭ মে জেলা যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ সম্মেলন ঘিরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে পুরো জেলা জুড়ে। পদ প্রত্যাশীদের ব্যানার পোস্টার ও বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে সম্মেলনস্থলসহ শহরের প্রতিটি মহাসড়ক। কে হবেন নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এ নিয়ে চলছে জেলা জুড়ে ব্যাপক আলোচনা।
এর আগে ২০১৪ সালের ২৭ জুন অনুষ্ঠিত হয়েছিল জেলা যুবলীগের সম্মেলন। ওই সম্মেলনে রেজাউর রহমান চঞ্চলকে সভাপতি ও ফারুক হোসেন মানিককে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করা হয়। দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়ায় রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন কমিটির অনেক নেতাকর্মী। ত্যাগী, পরীক্ষিত ও পরিচ্ছন্ন ইমেজের নেতৃত্ব চাইছেন কর্মীরা। নেতৃত্বে আসার প্রতিযোগিতায় এগিয়ে আছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা।
জেলা যুবলীগ সূত্রে জানা যায়, সম্মেলন বাস্তবায়ন করতে মিডিয়া উপকমিটি, মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপকমিটি, প্রচার উপকমিটি, শৃঙ্খলা উপকমিটিসহ কয়েকটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটিগুলো স্ব-স্ব দায়িত্ব পালন করেছে। সম্মেলনে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পৌরসভা ও উপজেলা পর্যায়ে বর্ধিত সভা হয়েছে। এবারের সম্মেলনে ৪২৬জন কাউন্সিলর অংশগ্রহণ করবেন। কয়েক হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত হবেন। এরই মধ্যে পদ প্রত্যাশীরা তাদের জীবনবৃত্তান্ত পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে। দীর্ঘদিন পর সম্মেলন হওয়ায় চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে চলছে শীতল লড়াই। জেলা থেকে শুরু করে কেন্দ্রসহ সর্বত্র লবিং করেছেন তারা। ছুটেছেন সংগঠনের নীতি নির্ধারকদের দ্বারে দ্বারে। অন্যদিকে জেলা যুবলীগে নতুন চমকের অপেক্ষা করছেন তৃণমূলের কর্মীরা।
সম্মেলন উপলক্ষে শুক্রবার (২৬ মে) টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে যুবলীগের কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতারা মতবিনিময় সভা করেছেন। জেলা যুবলীগের লীগের সভাপতি রেজাউর রহমান চঞ্চলের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য মামুনুর রশিদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সৈকত জোয়ারদার, সাংগঠনিক সম্পাদক জহির উদ্দিন খসরু, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক জহিরুল ইসলাম মিল্টন, আইটি সম্পাদক শামছুল আলম অনিক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মুস্তাফিজ, উপদপ্তর সম্পাদক দেলোয়ার শাহজাদা, কেন্দ্রীয় সদস্য মেহেরুল হাসান সোহেল, জহিরুল হক জাকির ও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন মানিক প্রমুখ।
কেন্দ্রীয় যুবলীগের চেয়ারম্যানের কাছে সভাপতি পদে ১০ জন প্রার্থী জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। তারা হলেন- আবু সাইম তালুকদার বিপ্লব, বিজয় দে, গোলাম কিবরিয়া বড়মনি, মাসুদ পারভেজ, মনিরুজ্জামান লিটন, মনিরুজ্জামান খান মিন্টু, অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান মনির, সাইফুল ইসলাম লাবলু, খন্দকার কামরুল হাসান, মেহেদী হাসান ফেরদৌস ইমু।
সাধারণ সম্পাদক পদে ১১ জন প্রার্থী হয়েছেন। তারা হলেন- নাজমুল হাসান, রেজাউল করিম সাগর, আব্দুল্লাহ আল রাকিব, মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল, মফিজুর রহমান মফিজ, ইশতিয়াক আহমেদ রাজীব, আল মামুন, মনির শিকদার, নুর মোহাম্মদ সিকদার মানিক, তানভীরুল ইসলাম হিমেল ও মীর সাব্বির।
জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা যুবলীগের সভাপতি রেজাউর রহমান চঞ্চল বলেন, যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে জেলা যুবলীগের সম্মেলন হতে যাচ্ছে। তবে আমরা চেষ্টা করব রাজপথের পরীক্ষিত কর্মীকে নেতৃত্ব দেওয়ার।
শহরের পৌরউদ্যোনে আয়োজিত যুবলীগের সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি। সম্মানিত অতিথি থাকবে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সংসদ সদস্য মির্জা আজম, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামছুন নাহার চাপা, সদস্য তারানা হালিম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান খান ফারুক।
প্রধান বক্তা থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল। বিশেষ অতিথি থাকবেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা জোয়াহেরুল ইসলাম (ভিপি জোয়াহের) এমপি, সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খান, সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন, সংসদ সদস্য হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী, সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনির, সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটু, সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভ, সংসদ সদস্য খন্দকার মমতা হেনা লাবলী, সংসদ সদস্য অপরাজিতা হক। বিশেষ বক্তা থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য মামুনুর রশিদ।
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মামুনুর রশিদ বলেন, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল পদ প্রতাশিদের জীবন বৃত্তান্ত দেখে যাচাই বাছাই করে সৎ, যোগ্য ও ত্যাগীদের নেতৃত্বে আনবেন। যারা দল ও টাঙ্গাইলের উন্নয়নে কাজে আসবে।