ভূঞাপুর প্রতিনিধি: ভূঞাপুরে ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় স্বাস্থ্যসেবা ব্যহত হচ্ছে। অথচ সেখানে অপারেশন কক্ষে সাজানো প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি থাকলেও চরাঞ্চলসহ উপজেলার সেবাগ্রহীতাদের চিকিৎসকের অভাবে বাধ্য হয়ে যেতে হচ্ছে বিভিন্ন ক্লিনিকে। এই সুযোগে ক্লিনিকগুলো রোগীদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে উপজেলায় ডায়রিয়া, পেট ব্যথা ও জ্বরজনিত রোগে আক্রান্তের ফলে হঠাৎ করেই হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে হাসপাতালের শয্যা সংকটের কারণে রোগীদের বারান্দায় চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ভূঞাপুরসহ যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ার কারণে পার্শ্ববর্তী গোপালপুর, ঘাটাইল ও কালিহাতী উপজেলার একাংশের মানুষ চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। এই হাসপাতালটিতে অপারেশনের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি থাকলেও সেগুলো ব্যবহার করা যাচ্ছে না চিকিৎসক সংকটের কারণে।
ফলে নিম্ন আয়ের মানুষেরা বাড়তি টাকা দিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন ক্লিনিকগুলো থেকে। সিজার বা বড় কোনো অস্ত্রোপচারের জন্য নেই এনেস্থেশিয়া চিকিৎসক। এছাড়া সার্জারি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও নেই। এছাড়া আল্ট্রাসনোগ্রামের চিকিৎসক ও ইসিজি করানোর জন্য নেই কোনো জনবল। ফলে জরুরি রোগীদের নিয়মিত পাঠিয়ে দেওয়া হয় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ জানায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি হতে এপ্রিল পর্যন্ত ৯৫১ জনের ছোটখাটো অস্ত্রোপচার হয়েছে। টিউমার, ফোড়া, সেলাইসহ বিভিন্ন ধরনের রোগীদের কাটা ছেড়ার জন্য লোকাল ব্যবহার করে এসব অস্ত্রোপচার করা হয়। হাসপাতালে সিজার না হওয়ায় গত তিন মাসে ১৪২ জন প্রসূতির নরমাল ডেলিভারি করানো হয়েছে। এছাড়া তিন মাসে ৫টি সিজার হয়েছে মাত্র।
তবে রোগীরা জানান, হাসপাতালে সিজার হয় না। এছাড়া গাইনি চিকিৎসককেও নিয়মিত পাওয়া যায় না। এছাড়া জরুরি রোগীকে টাঙ্গাইল নেওয়ার জন্য চালকের অভাবে গাড়িও পাওয়া যায় না। ফলে হাসপাতালের পাশে থাকা বাইরের অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া নিতে হয় বাড়তি টাকা দিয়ে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুস সোবহান বলেন, চিকিৎসক সংকটের কারণে সিজার বা বড় ধরনের অপারেশন হয় না। এছাড়া একজন চালক রয়েছে তাও আবার আউট সোর্সিংয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত। এনেস্থেশিয়া ও সার্জারি চিকিৎসক হাসপাতালে নিয়োগ করা হলে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। এছাড়া হাসপাতালে এক্সরে ফিল্ম বরাদ্দ না থাকায় বাইরে থেকে এক্সরে ফিল্ম কিনে মানুষজনকে সেবা দেওয়া হচ্ছে।