মির্জাপুরের কুমুদিনী হাসপাতাল বিনা খরচে দিচ্ছে জরায়ুর রোগের চিকিৎসা

মির্জাপুরের কুমুদিনী হাসপাতাল বিনা খরচে দিচ্ছে জরায়ুর রোগের চিকিৎসা

মির্জাপুর স্বাস্থ্য

মির্জাপুর প্রতিনিধি: মির্জাপুরে কুমুদিনী হাসপাতালে বিনামূল্যে মহিলাদের জরায়ুর সমস্যাজনিত রোগ পেলভিক অরগান প্রোলান্স’র চিকিৎসা দেয়া হবে। কুমুদিনীতে বিদেশী ডাক্তারদের তত্ত্বাবধানে বিনামূল্যে জরায়ুর চিকিৎসা অস্ট্রেলিয়ান উঅক ফাউন্ডেশন ও ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় ‘প্রশান্তি প্রজেক্ট’ বিনামূল্যে এই চিকিৎসাসেবা প্রদান করবেন বলে শনিবার সকালে কুমুদিনী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এক প্রেস ব্রিফিংএ স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়েছে।

প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অধীনে কুমুদিনী হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের প্রোলান্স রোগী অপারেশন ও প্রশিক্ষণ দেবেন অস্ট্রেলিয়ার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. বারবারা অ্যান হল ও ডা.জন উইলিয়াম টেইলর। অস্ট্রেলিয়ান চিকিৎসক দম্পতি কুমুদিনী হাসপাতালে পৌছালে তাদের ফুল দিয়ে স্বাগত জানান হাসপাতালের পরিচালক ডা. প্রদীপ কুমার রায়, সহকারী পরিচালক ডা. এবিএম আলী হাসান প্রমুখ।

রবিবার (১৩ মে) কুমুদিনী হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ১৩-১৫ মে পর্যন্ত তিন দিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্দেশ্য নিয়ে এসব তথ্য জানান কুমুদিনী মহিলা মেডিক‌্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. আব্দুল হলিম। কুমুদিনী হাসপাতালের পরিচলক ডা. প্রদীপ রায়, কুমুদিনী মহিলা মেডিক‌্যাল কলেজের গাইনি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. বিলকিস বেগম চৌধুরী, মির্জপুর উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সের ডা. শ্রাবণী সাহা, কুমুদিনী হাসপাতালের সহকারী পরিচালক এবিএম আলী হাসান, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার অনিমেশ ভৌমিক ও সহকারী প্রজেক্ট ম্যানেজার আব্দুল হাই এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার ড্যাক অ্যান্ড কেরি (ডিএকে) ফাউন্ডেশন এবং ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের সহায়তায় জরায়ু জটিলতা সংক্রান্ত রোগ পেলভিক অরগান প্রোলান্স এর চিকিৎসা কর্মসূচি চালু হয়। বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ ভাইরাস ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়লে এই কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত হয়। সেই কর্মসূচিটি আবারও শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয় সংবাদ সম্মেলনে।

জানা গেছে, প্রতি বছর বাংলাদেশে জরাযু সমস্যাজনিত কারণে ৩ লাখ নারী ও ৩০ লাখ নবজাতক শিশু মৃত্যু বরণ করে থাকে। এর অন্যতম কারণ অনভিজ্ঞ দাইদের দিয়ে সন্তান প্রসব করানো, অজ্ঞতা, সমস্যার কথা পরিবারের সদস্যদের না জানানো, সুষ্ঠু চিকিৎসার অভাব। সচেতনতা সৃষ্টি এবং সময়মত চিকিৎসার মাধ্যমে এই মৃত্যুও হার কমিয়ে আনা সম্ভব বলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কর্মসূচির অধীনে চিকিৎসক ও সেবিকদের প্রশিক্ষণ ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কুমুদিনী হাসপাতালের নিজস্ব ব্যবস্থাপনা এবং ব্র্যাকের বিভিন্ন শাখার সহযোগিতায় রোগী সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট এলাকায় রোগী স্ক্যানিং করা হয়। যাদের অপারেশন প্রয়োজন তাদের বাছাই করে কুমুদিনী হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে প্রশিক্ষিত ডাক্তার ও সেবিকাদের নিবিড় পরিচর্যায় অপারেশন করা হয়। আর এই পুরো প্রক্রিয়াটা সম্পূর্ণ বিনা পয়সায় সম্পন্ন করা হয়। কর্মসূচিটি চালু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৬০০ নারীর অপারেশন সুসম্পন্ন হয়েছে বলে জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শুধু মির্জাপুর উপজেলা বা টাঙ্গাইল জেলাই নয় সারাদেশের যেকোনো প্রান্তের রোগী এই কর্মসূচির অধীনে বিনা খরচে এই সেবা নিতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *