সখিপুরে সরকারি পুকুর থেকে মাটি কেটে বিক্রির অভিযোগ

সখিপুর

সখিপুর প্রতিনিধি: সখিপুর উপজেলার হতেয়া-রাজাবাড়ি ইউনিয়নের তক্তারচালা মৌজার ঝিনিয়া পুর্বপাড়ায় সরকারি পুকুর (সায়রাত মহল) থেকে মাটি কেটে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় যুবলীগ নেতা শামীমসহ তক্তারচালা নতুন বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ফরহাদ সিকদার শান্ত মিয়া, সোহেল সিকদার ও তুহিন মিয়ার বিরুদ্ধে ।

সরেজমিন বুধবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে দেখা যায়, উপজেলার তক্তার চালা মৌজার ঝিনিয়া পুর্বপাড়া গ্রামের ৭২ শতাংশ আয়তনের একটি সরকারি পুকুর থেকে ভেকু বসিয়ে ১৫-২০টি ড্রাম ট্রাক দিয়ে মাটি কেটে সততা এন্টারপ্রাইজের রশিদের মাধ্যমে বিক্রি করছেন একটি মহল। সরকারি শাল-গজারী বনের মধ্যে অবস্থিত পুকুরটি থেকে মাটি কাটতে গিয়ে অনেক মূল্যবান বনজ গাছ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

এছাড়া স্থানীয় এলাকাবাসীর চলাচলের একমাত্র মাটির রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। রাস্তার ধারের বাড়িগুলোতে লাল মাটির আস্তরণ পড়ে গেছে। মাটি কাটার চক্রটি এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। এছাড়াও কোটি টাকা ব্যয় করে নতুনভাবে সংস্কার করা তক্তার চালা-বাইটকারচালা সড়কটিতে দিনরাত ড্রাম ট্রাক চলাচলের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয়রা।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বেশ কয়েকজন জানান, এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে এলাকার বিভিন্ন টিলা কেটে মাটি বিক্রি করে আসছে। তারা আরো জানান, স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই তারা সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভিতর থেকে বনভূমি বিনষ্ট করে লাল মাটি কাটার সাহস পাচ্ছে।

গত একমাস যাবৎ তারা ভূমি অফিসে মাটি ফেলার নাম করে সরকারি ওই পুকুর থেকে মাটি কাটছে। লোক দেখানোর জন্য নামমাত্র ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অল্প কিছু মাটি ফেলছে। পুকুরের নব্বই শতাংশ মাটি তারা রশিদের মাধ্যমে অন্যত্র বিক্রি করছে। কেউ প্রতিবাদ করতে গেলে তাকে নানাভাবে হেনস্থা করা হয় বলে তারা জানান।

এ প্রসঙ্গে মাটি ব্যবসায়ী যুবলীগ নেতা শামীম মিয়া মুঠোফোনে জানান, সরকারি পুকুর থেকে মাটি কেটে সখিপুর উপজেলা চত্তর ও হাতীহান্ধা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে মাটি ফেলা হচ্ছে। অন্যত্র মাটি বিক্রির কথা জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন।

হাতীবান্ধা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহকারী হামিদুর রহমানের নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি নতুন এসেছি, এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারবো না। আপনি ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তার কাছে জানেন।

হাতীবান্ধা ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা সাঈদা নাজনিন জানান, ওই পুকুর থেকে সরকারিভাবে মাটি কাটা হচ্ছে। কিছু মাটি ভূমি অফিসে ফেলা হচ্ছে। আর অবশিষ্ট মাটি অন্যত্র বিক্রি করে তাদের ভেকু খরচ উঠিয়ে নিচ্ছে।

সখিপুর সহকারী কর্মকর্তা (ভূমি) হা-মীম তাবাসসুম প্রভার মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্ঠা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। সখিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা আলম জানান, সখিপুরে হাতীবান্ধা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সামনে নিচু জায়গা ভরাট করার জন্য ওই সরকারি পুকুর থেকে মাটি কাটার বিষয়টি আমি জানি। সরকারি বিধি মোতাবেক মাটি ভরাট করতে গেলে সময় ও ব্যয় বেশি হওয়ায় মৌখিকভাবে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *